SAARC কী? এর গঠন বা উদ্দেশ্য কি ছিল? এর মূল্যায়ন করো?

Published On:

WhatsApp Channel Join Now
Telegram Group Join Now

SAARC কী? এর গঠন বা উদ্দেশ্য কি ছিল? এর মূল্যায়ন করো?

Ans:- দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর গোটা বিশ্বে যেমন ঔপনিবেশিক শাসনের অবসান ঘটেছিল তেমনি আঞ্চলিক সহায়তার জন্য গোটা বিশ্বে বহু সংগঠন (SEATO, CENTO, ASIAN)  গড়ে উঠেছিল। 1985 খ্রিস্টাব্দে দক্ষিণ এশিয়ার রাষ্ট্রগুলি কে নিয়ে যে সংগঠন গড়ে ওঠে তাকে SAARC বা সার্ক বলে। সম্পূর্ণ নামঃ- South Asian Association for Regional Co- Operation.  SAARC – এর সদর দপ্তর হল নেপালের কাঠমান্ডু।

SAARC প্রতিষ্ঠার পটভূমি :-

জিয়াউর রহমানের শ্রীলঙ্কা সফর:- 1979 খ্রিস্টাব্দের বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জিয়াউর রহমান শ্রীলঙ্কা সফরে গেলে দক্ষিণ এশিয়ার রাষ্ট্রগুলি কে নিয়ে এক সংগঠন গড়ে তোলার কথা বলেন।

SAARC প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত গ্রহণ:- জিয়াউর রহমানের অনুপ্রেরণায় অনুপ্রাণিত হয়ে ভারত, শ্রীলংকা, নেপাল, ভুটান প্রভৃতি দেশের বিদেশমন্ত্রী 1983 খ্রিস্টাব্দে দিল্লির সম্মেলনে SAARC প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিল।

SAARC এর প্রতিষ্ঠা:- 1985 খ্রিস্টাব্দে এইসব রাষ্ট্রগুলি মিলিত হয়ে ঢাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা স্থাপনের জন্য SAARC প্রতিষ্ঠা করেন। 1985 খ্রি: SAARC- এর প্রতিষ্ঠাকালে এর সদস্য ছিল সাতটি দেশ।যথা- ১) ভারত, ২) বাংলাদেশ, ৩) নেপাল, ৪) ভুটান, ৫) পাকিস্তান, ৬) মালদ্বীপ, ৭)শ্রীলঙ্কা ।

আরো পড়ুন

দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাসের সমস্ত অধ্যায় থেকে  বড়ো প্রশ্ন উত্তর পেতে ক্লিক করুন

SAARC এর লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য

1985 খ্রিস্টাব্দে বিভিন্ন উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার রাষ্ট্রগুলি SAARC প্রতিষ্ঠা করেন। এইসব লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য গুলি হল:-

) উন্নয়নের প্রসার:- এই সংগঠনের সদস্য রাষ্ট্র গুলির অভ্যন্তরীণ বা বাহ্যিক দিক থেকে সাহায্য প্রদানের মাধ্যমে উন্নয়নের প্রসার ঘটানো।

) জনকল্যাণ:- অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক সাহায্য প্রদানের মাধ্যমে জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করা।

) আত্মনির্ভরতা:- সদস্য রাষ্ট্রগুলো কে সকল দিক থেকে সাহায্য দিয়ে আত্মনির্ভর করে তোলা।

) নিরাপত্তা রক্ষা:- দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের নিরাপত্তা রক্ষা করা ও সাম্রাজ্যবাদ প্রতিরোধ করা।

) অর্থনৈতিক সামাজিক লেনদেন:- সদস্য রাষ্ট্রগুলিকে আর্থিক ও সামাজিক সাহায্য প্রদান করা।

) সাংস্কৃতিক লেনদেন:- দক্ষিণ এশিয়ার দেশ গুলি তথা সদস্য রাষ্ট্র গুলির মধ্যে সাংস্কৃতিক লেনদেন করা।

) ব্যবসাবাণিজ্যের প্রসার:- ব্যবসা-বাণিজ্যের আমদানিকৃত দ্রব্য নিজেদের মধ্যে রপ্তানি করে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটানো।

) অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা:- সদস্য রাষ্ট্রগুলির একে অপরের ভৌগোলিক অখন্ডতা বজায় রাখা ও অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা।

SAARC এর মূল্যায়ন

1985 সালে SAARC একাধিক লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য নিয়ে গড়ে উঠেছিল। দক্ষিণ এশিয়ায় এই সার্ক বা SAARC এর বিশেষ ভূমিকা পালন করা হয়।

) সহযোগিতা প্রদান:- SAARC দক্ষিণ এশিয়ায় সদস্য রাষ্ট্র গুলির মধ্যে আর্থিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সহযোগিতা প্রদান করে এবং সদস্য রাষ্ট্রের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে ভূমিকা পালন করে।

) কর্মসূচির বাস্তবায়ন:- SAARC নেপালের কাঠমান্ডু তে সদর দপ্তর স্থাপন করে কর্মসূচি গুলির বাস্তবায়নে সচেষ্ট হয়েছে।

) অর্থনৈতিক লেনদেন:- SAARC দক্ষিণ এশিয়ার সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে আর্থিক দিক থেকে লেনদেনের জন্য সুব্যবস্থা করেছে। বাণিজ্যিক সহযোগিতায় স্থাপন করেছে।

) সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধ:- দক্ষিণ এশিয়া তথা গোটা বিশ্বের সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধ করার জন্য সার্ক বা SAARC পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

) ভিসা সমস্যার সমাধান:- SAARC দক্ষিণ এশিয়ার সদস্যবৃন্দ রাষ্ট্রগুলির মধ্যে ভিসা সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

) শিশু কল্যাণ পুরস্কার:- SAARC দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে শিশু কল্যাণ মূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এক বহু কীর্তি ব্যক্তিদের পুরস্কৃত করেছে।

মূল্যায়ন: পরিশেষে বলা যায় যে মাত্র সাতটি দেশ নিয়ে সার্ক গঠিত হলেও, এই সংগঠনটি দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে অসামান্য অবদান রেখে গেছে।

আরো পড়ুন

দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাসের সমস্ত অধ্যায় থেকে  বড়ো প্রশ্ন উত্তর পেতে ক্লিক করুন


সবার আগে সমস্ত পরীক্ষার গুরুত্বপূর্ণ নোটস এবং মকটেস্ট পেতে জয়েন করুন -

আরও গুরুত্বপূর্ণ

× close ad