তৈল কূটনীতি বলতে কী বোঝো? তৈল কূটনীতি কিভাবে উপসাগরীয় সংকটের সৃষ্টি করেছিল?

Published On:

WhatsApp Channel Join Now
Telegram Group Join Now

তৈল কূটনীতি বলতে কী বোঝো? তৈল কূটনীতি কিভাবে উপসাগরীয় সংকটের সৃষ্টি করেছিল?

ভূমিকা: বিংশ শতকের আটের দশকের শেষ ও নয়ের দশকের সূচনায় মধ্যপ্রাচ্যের সবথেকে অন্যতম ঘটনা ছিল উপসাগরীয় সংকট। ঠান্ডা লড়াইয়ের অন্তিম লগ্নে এই সংকট বিশ্ব রাজনীতিকে নতুনভাবে উত্তপ্ত করেছিল। যার উদ্ভবের অন্যতম কারণ ছিল তৈল কূটনীতি।

তৈল কূটনীতি: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আমেরিকা অর্থনৈতিক দিক থেকে কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ে। অন্যদিকে তার প্রতিরক্ষা খরচ বেড়ে যায়। এর ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে মধ্যপ্রাচ্যের তেল ভান্ডারের প্রতি নজর দেয়। এই উদ্দেশ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করে। তার প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা উদ্যোগ নেয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই কূটনৈতিক উদ্যোগ তৈল কূটনীতি নামে পরিচিত।

উপ মহাসাগরীয় সংকট

ব্রিটেন সোভিয়েত প্রাধান্য:- বিদেশি সাহায্যে তেল উত্তোলনের লক্ষ্যে ব্রিটেন ও সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে ইরান এক চুক্তিতে আবদ্ধ হয়। এই চুক্তি অনুযায়ী ইরানের উত্তর অংশে সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং দক্ষিণ অংশে ব্রিটেনের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হয়।

মার্কিন উদ্যোগ:-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার দেশের সঞ্চিত তেল সম্পর্কে সঙ্কিত হয়। ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন রাষ্ট্রে তৈল খনি গুলির উপর নিজের দখলদারি প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগ নেয়।

আরো পড়ুন

দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাসের সমস্ত অধ্যায় থেকে  বড়ো প্রশ্ন উত্তর পেতে ক্লিক করুন

আন্তর্জাতিক সমস্যা:- ইরানে রাশিয়ার প্রাধান্য ব্রিটেন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মেনে নিতে পারেনি। এর ফলে তারা সোভিয়েত রাশিয়ার বিরোধিতা করলে মধ্যপ্রাচ্যের সমস্যা আন্তর্জাতিক সমস্যায় পরিণত হয়।

ইরানের বিরোধিতা:-ইরানে বিদেশি রাষ্ট্রের খবর দাড়ি সেখানকার পার্লামেন্ট মেনে নিতে পারেনি। ফলে ইরানের মধ্যে লিস এক আইন পাস করিয়ে তেলের খনি গুলিকে জাতীয়করণ করে নেয়।

উপসাগরীয় সংকট:- ইরান তার ,তৈল সম্পদকে জাতীয়করণ ঘোষণা করলে 1979 সালে আয়াতুল্লাহর নেতৃত্বে ইরানে মার্কিন বিরোধিতা শুরু হয়। এই পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য রোনাল্ড রিগ্যান ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধনীতি গ্রহণ করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এক্ষেত্রে ইরান কে ব্যবহার করে। এর ফলে পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হলে মধ্যপ্রাচ্যে উপসাগরীয় সংকটের সৃষ্টি হয়।

সরকারের বহিঃপ্রকাশ:-উপসাগরীয় সংকটের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল তিনটি যুদ্ধের মধ্য দিয়ে। ক) ইরাক – ইরান যুদ্ধ (1980-1988) খ) প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধ (1990-1991) খ) দ্বিতীয় উপসাগরীয় যুদ্ধ (2003) তিনটি যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে এক ধ্বংসাত্মক পরিণতি ঘটে উপসাগরীয় সংকটের সমাপ্তি হয়।

মূল্যায়ন (প্রভাব) : সুতরাং দেখা যাচ্ছে আমেরিকার উদ্যোগে তেল কূটনীতির নতুন বিন্যাস উপসাগরীয় সংকটের জন্য অনেকাংশেই দায়ী। এই অঞ্চলে আমেরিকার আধিপত্য প্রতিষ্ঠার মরিয়া চেষ্টাই উপসাগরীয় সংকটকে গভীর করে তুলেছিল। ইরাকের রাষ্ট্রপতি সাদ্দম হোসেনের কুয়েত আক্রমণের মত অবিবেচনাপ্রসূত, হটকারী সিদ্ধান্তও এক্ষেত্রে পরক্ষে সহায়ক ভূমিকা নিয়েছিল। সর্বোপরি উপসাগরীয় যুদ্ধে জয়লাভের ফলে মার্কিন রাষ্ট্রপতি জর্জ বুশের মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। আমেরিকা একমেরু বিশ্বের দিকে একধাপ এগিয়ে যায়।

আরো পড়ুন

দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাসের সমস্ত অধ্যায় থেকে  বড়ো প্রশ্ন উত্তর পেতে ক্লিক করুন


সবার আগে সমস্ত পরীক্ষার গুরুত্বপূর্ণ নোটস এবং মকটেস্ট পেতে জয়েন করুন -

আরও গুরুত্বপূর্ণ

× close ad