১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে প্রবর্তিত ভারত শাসন আইন বা মন্টেগু-চেমসফোর্ড সংস্কার আইনের বিভিন্ন শর্তগুলি উল্লেখ করাে।

Published On:

WhatsApp Channel Join Now
Telegram Group Join Now

১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে প্রবর্তিত ভারত শাসন আইন বা মন্টেগুচেমসফোর্ড সংস্কার আইনের বিভিন্ন শর্তগুলি উল্লেখ করাে

সূচনা: ভারত-সচিব মন্টেগু ও ভাইসরয় লর্ড চেমসফোর্ডের যৌথ রিপাের্টের ভিত্তিতে ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে নতুন ভারত শাসন আইন পাস হয়। এটি মন্টেগু-চেমসফোর্ড শাসন সংস্কার বা ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইন নামে পরিচিত।

মন্টেগু চেমসফোর্ড অইিনের শর্তাবলি:-

ক্ষমতা বণ্টন: মন্টেগু-চেমসফোর্ড আইনের দ্বারা কেন্দ্র ও প্রাদেশিক সরকারের মধ্যে ক্ষমতা ও আয় সুনির্দিষ্টভাবে বণ্টিত হয়।

কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা: কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে দেশরক্ষা, রেলব্যবস্থা, মুদ্রাব্যবস্থা, বৈদেশিক সম্পর্ক, আয়কর, শুল্ক, বাণিজ্য, ডাকব্যবস্থা প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির দায়িত্ব দেওয়া হয়।

প্রাদেশিক সরকারের ক্ষমতা: প্রাদেশিক সরকারগুলির হাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, পুলিশ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, সেচ, ভূমিরাজস্ব, যােগাযােগব্যবস্থা প্রভৃতি তুলনামূলকভাবে কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির দায়িত্ব দেওয়া হয়।

কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহক পরিষদ: মন্টেগু চেমসফোর্ড আইনের দ্বারা ৮ জন সদস্য নিয়ে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহক পরিষদ বা বড়ােলাটের শাসন পরিষদ (Executive Council) গঠিত হয়। এই ৮ জনের মধ্যে অন্তত ৩ জন সদস্য হবেন ভারতীয়।

আরো পড়ুন

দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাসের সমস্ত অধ্যায় থেকে  বড়ো প্রশ্ন উত্তর পেতে ক্লিক করুন

 কেন্দ্রীয় আইনসভা: ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের মন্টেগু-চেমসফোর্ড সংস্কার আইনের দ্বারা কেন্দ্রীয় আইনসভা গঠন করা হয়। এর বিশেষ দিকগুলি ছিল—

দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা: মন্টেগু-চেমসফোর্ড আইনের দ্বারা কেন্দ্রে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা গঠিত হয়। এর নিম্নকক্ষের নাম হয় কেন্দ্রীয় আইনসভা (Legislative Assembly) এবং উচ্চকক্ষের নাম হয় ‘রাষ্ট্রীয় পরিষদ’ (Council of States)।

সদস্যসংখ্যা: উচ্চকক্ষের ৬০ জন সদস্যের মধ্যে ২৬ জন ছিলেন বড়লাটের দ্বারা মনােনীত ও ৩৪ জনকে নির্বাচিত এবং নিম্নকক্ষের ১৪০ (পরে ১৪৫) জন সদস্যের মধ্যে ৪০ জনকে মনােনীত এবং ১০০ (পরে ১০৫) জনকে নির্বাচিত করার ব্যবস্থা করা হয়।

আইন প্রণয়ন: আইনসভার সদস্যরা সভায় কোনাে বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপন, বিতর্কে যােগদান, ছাঁটাই বা সংশােধনী প্রস্তাব পেশ প্রভৃতির অধিকার পেলেও বৈদেশিক নীতি, সামরিক বিভাগ প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বড়ােলাটের পূর্ব অনুমতি ছাড়া আলােচনার অধিকার পেতেন না।

প্রাদেশিক দ্বৈতশাসন: মন্টেগু-চেমসফোর্ড আইনের দ্বারা প্রদেশগুলিতে এককক্ষবিশিষ্ট আইনসভা গঠিত হয়। এর ৭০ শতাংশ সদস্য নির্বাচিত ও ৩০ শতাংশ সদস্য গভর্নরের দ্বারা মনােনীত করার ব্যবস্থা হয়। প্রাদেশিক সরকারের দায়িত্বগুলিকে দুইভাগে বিভক্ত করা হয়।

ভারত সচিবের কাউন্সিল: মন্টেগু-চেমসফোর্ড আইনে বলা হয় যে, ভারত সচিবের কাউন্সিলের সদস্যসংখ্যা ৮ থেকে ১২ জন হবে। এর অর্ধেক সদস্য নিযুক্ত হবেন ভারতে কমপক্ষে ১০ বছর বসবাস বা চাকরি করেছেন এমন ব্যক্তিদের মধ্য থেকে।

উপসংহার: প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে জাতীয় চেতনায় উদ্বুদ্ধ ভারতীয় নেতৃবৃন্দ নিজেদের রাজনৈতিক অধিকার আদায়ে আরও বেশি সচেতন হয়ে ওঠে। তাই ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের আইন তাদের খুশি করতে পারেনি।

আরো পড়ুন

দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাসের সমস্ত অধ্যায় থেকে  বড়ো প্রশ্ন উত্তর পেতে ক্লিক করুন


সবার আগে সমস্ত পরীক্ষার গুরুত্বপূর্ণ নোটস এবং মকটেস্ট পেতে জয়েন করুন -

আরও গুরুত্বপূর্ণ

× close ad