উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্নপত্র 2015 | H.S Bengali Question Paper 2015 | উচ্চমাধ্যমিক সমস্ত বিষয় বিগত 10 বছরের প্রশ্নপত্র

Published On:

WhatsApp Channel Join Now
Telegram Group Join Now

Dear student

তোমাকে আমাদের ওয়েবসাইটে স্বাগতম। আজকে আমি তোমাদের জন্য নিয়ে এসেছি । H.S Bengali Question Paper 2015 – উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্নপত্র 2015 | HS History Question and Answer । যা তোমাদের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভাবে তোমাকে সাহায্য করবে। তাই মন দিয়ে এই প্রশ্ন উত্তর গুলো ভালো করে পড়বে।

H.S Bengali Question Paper 2015 – উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্নপত্র 2015 -WBCHSE Questions Paper With Answe || H.S West Bengal Board (WBCHSE) Last 10 Year Question Paper ||  West Bengal HS Previous Year Question Paper || WB HS Previous Years Question Paper | উচ্চমাধ্যমিক বিগত বছরের প্রশ্নপত্র [WBCHSE]

পরীক্ষাউচ্চমাধ্যমিক 2015
বিষয়বাংলা
সময়3 ঘন্টা 15 মিনিট
পূর্ণমান80

বিভাগ (নম্বর৩০)

. ঠিক বিকল্পটি নির্বাচন করুন : ×১৮=১৮

১.১ রূপমূল হল—
(ক) ভাষার ক্ষুদ্রতম অর্থপূর্ণ একক
(খ) পদের গঠন বৈচিত্র
(গ) শব্দার্থের উপাদান।
(ঘ) ভাষার ক্ষুদ্রতম উচ্চারণগত একক

উত্তরঃ () পদের গঠন বৈচিত্র

১.২ উষ্ম ধ্বনি টি হল—
(ক) ত্     (খ) শ্     (গ) ম্     (ঘ) ল্

উত্তরঃ () শ্

১.৩ ‘মেঘে ঢাকা তারা’ ছায়াছবিটি তৈরি করেছেন—
(ক) সত্যজিৎ রায় (খ) মৃণাল সেন
(গ) উত্তম কুমার (ঘ) ঋত্বিক ঘটক

উত্তরঃ () ঋত্বিক ঘটক

১.৪ অভিধানে পট শব্দটির অর্থ—
(ক) পতাকা (খ) পুস্তক (গ) চিত্র
(ঘ) সংগীত

উত্তরঃ () চিত্র

১.৫ বলো বলো বলো সবে গানটি লিখেছেন—
(ক) কাজী নজরুল ইসলাম
(খ) রজনীকান্ত সেন
(গ) দ্বিজেন্দ্রলাল রায়
(ঘ) অতুল প্রসাদ সেন

উত্তরঃ () অতুল প্রসাদ সেন

১.৬ সাত বছরের যুদ্ধ জিতেছিল—
(ক) দ্বিতীয় ফ্রেডারিক
(খ) আলেকজান্ডার
(গ) সিজার
(ঘ) ফিলিপ

উত্তরঃ (ক) দ্বিতীয় ফ্রেডারিক

অথবা,

বলী কান্ধারী ছিলেন একজন—
(ক) ধনী ব্যক্তি (খ) দরবেশ (গ) গৃহী ব্যক্তি (ঘ) ভীরু ব্যক্তি

উত্তরঃ (খ) দরবেশ

১.৭ যাও যাও এই কি রবীন্দ্রনাথের গান হচ্ছে নাকি গানটি হল—
(ক) ভালোবেসে সখী নিভৃত যতনে
(খ) আলো আমার আলো
(গ) ওই মহামানব আসে
(ঘ) মালতীলতা দোলে

উত্তরঃ (ঘ) মালতীলতা দোলে

অথবা,

“যারা বলে নাট্যাভিনয় একটি পবিত্র শিল্প’- তারা সব”—
(ক) ভেড়া (খ) গাধা (গ) বোকা (ঘ) চালাক

উত্তরঃ (ঘ) চালাক

১.৮ ‘নানা রঙের দিন’ নাটকটিতে চরিত্র আছে—
(ক) একটি (খ) দুটি (গ) তিনটি (ঘ) পাঁচটি

উত্তরঃ (খ) দুটি

অথবা,

“বহুরূপী তখন লাটে উঠবে”- ‘বহুরূপী’ একটি—
(ক) বিদ্যালয় (খ) পাঠশালা
(গ) নাট্যগোষ্ঠী (ঘ) গ্রাম

উত্তরঃ (গ) নাট্যগোষ্ঠী

১.৯ “পৃথিবীতে সবচেয়ে পপুলার জিনিস হচ্ছে প্রেম”- উক্তিটি করেছেন—
(ক) অমর (খ) বৌদি (গ) শম্ভু (ঘ) নাট্যকার

উত্তরঃ (খ) বৌদি

অথবা,

রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় থিয়েটারে আসার আগে চাকরি করতেন—
(ক) পুলিশে (খ) ডাক বিভাগে (গ) জাহাজে (ঘ) কলেজে

উত্তরঃ (ক) পুলিশে

১.১০’ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতাটি কোন কাব্যগ্রন্থ থেকে গৃহীত ?
(ক) আমপাতা জামপাতা
(খ) সর্ষে ক্ষেত
(গ) ধানক্ষেত
(ঘ) জলপাই কাঠের এসরাজ

উত্তরঃ (গ) ধানক্ষেত

১.১১ “অবসন্ন মানুষের শরীরে দেখি”—
(ক) ধুলোর কলঙ্ক (খ) অপমানের কলঙ্ক (গ) পোড়া দাগ (ঘ) চাঁদের কলঙ্ক

উত্তরঃ (ক) ধুলোর কলঙ্ক

১.১২ “রোগা শালিকের হৃদয়ের বিবর্ণ ইচ্ছার মতো”—
(ক) কোবির হৃদয়ের রং
(খ) আকাশের রং
(গ) সূর্যের আলোর রং
(ঘ) দেশোয়ালিদের জ্বালানো আগুনের রং

উত্তরঃ (ঘ) দেশোয়ালিদের জ্বালানো আগুনের রং

১.১৩ রক্তের অক্ষরে দেখিলাম—
(ক) মৃত্যুর রূপ (খ) প্রকৃতির রূপ
(গ) আপনার রূপ (ঘ) রূপনারানের রূপ

উত্তরঃ (গ) আপনার রূপ

১.১৪ ‘…বৃষ্টির সঙ্গে বাতাস জোরালো হলে তারা বলে’—
(ক) পুষে বাদলা (খ) ডাওর (গ) ফাঁপি
(ঘ) ঝড়-বৃষ্টি

উত্তরঃ (গ) ফাঁপি

১.১৫ ‘কালো বিড়ালের লোম আনতে গেছে’—
(ক) ভজন চাকর। (খ) বড়পিসিমা
(গ) উচ্ছব (ঘ) বড় বউ

উত্তরঃ (ক) ভজন চাকর

১.১৬বড়োবাড়িতে কোন পানি চালের ভাত রান্না হয়—
(ক) বামন চাকর ঝি-দের জন্য
(খ) মেজ আর ছোটর জন্য
(গ) বড়োবাবুর জন্য
(ঘ) নিরামিষ ডাল তরকারি সঙ্গে খাবার জন্য

উত্তরঃ (গ) বড়োবাবুর জন্য

১.১৭ “মৃত্যুঞ্জয় একতারা নোট নিখিলের সামনে রাখলো”- টাকাটা—
(ক) নিখিলকে ধার দেবে বলে
(খ) রিলিফ ফান্ডে দেবে বলে
(গ) নিখিলকে ঘুষ দেবে বলে
(ঘ) অফিসের সকলকে ভুরিভোজ করাবে বলে

উত্তরঃ (খ) রিলিফ ফান্ডে দেবে বলে

১.১৮”মনে আঘাত পেলে মৃত্যুঞ্জয়ের…”-

(ক) বমি হয় (খ) ঘুম পায় (গ) রাগ হয় (ঘ) শরীরে তার প্রতিক্রিয়া হয়

উত্তরঃ (ঘ) শরীরে তার প্রতিক্রিয়া

২.অনধিক ২০টি শব্দে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও : ১×১২=১২

২.১ যুক্ত ধ্বনি বলতে কী বোঝো ?
উত্তরঃ যে ব্যঞ্জনধ্বনির সমাবেশগুলি শব্দের আদ্য অবস্থানে বা দলের আদিতে উচ্চারিত হতে পারে সে গুলিকে যুক্তধ্বনি বলে। যেমন-প্র,ত্র।

২.২ ‘বিরাট আর্মাডা যখন ডুবলো’- আর্মাডা কী ?
উত্তরঃ আর্মাডা একটি স্পেনীয় নৌবহর। ষোড়শ শতকের শেষার্ধে (১৫৮৮ খ্রিস্টাব্দে) এটি ইংল্যান্ডের কাছে পরাজিত হয়।

অথবা,

কীভাবে ঝরনার জল বেরিয়ে এসেছিল ?
উত্তরঃ পাথরটি তুলে ফেলায় ঝরনার জল বেরিয়ে এসেছিল।

২.৩ ওড়িয়া নাটকের দুত ঘোড়ায় চড়ার অভিনয় কীভাবে করে ?
উত্তরঃ ছোট্ট ছেলের মত দুই পায়ের ফাঁকে একটা লাঠি গলিয়ে ঘোড়ায় চড়ার অভিনয় করে।

অথবা,

“আপনি বামুন মানুষ, মিছে কথা বলব না।”- বক্তা কোন সত্যি কথাটি বলেছিল ?
উত্তরঃ বক্তা কালিনাথের কোথাও শোয়ার জায়গা নেই, তাই মালিকের অজান্তে গ্রিনরুমে ঘুমায়- এই সত্যিকথাটি বলেছিল।

২.৪ “…গভীর, বিশাল শব্দ,”- কী গভীর এবং সেখানে কিসের শব্দ হয় ?
উত্তরঃ কয়লা খনি গভীর, সেখানে কাজ করার শব্দ হয়।

২.৫ “কঠিনেরে ভালোবাসিলাম”- কবি কেন ‘কঠিন’-কে ভালবাসলেন ?
উত্তরঃ জীবনের কঠিনই সত্য, সে বঞ্চনা করেনা বলেই কবি ‘কঠিন’-কে ভালোবেসেছিলেন।

২.৬ নিখিলের সমপদস্থ মৃত্যুঞ্জয় নিখিলের তুলনায় কত টাকা মাইনে বেশি পায় এবং কেন ?
উত্তরঃ পঞ্চাশ টাকা বেশি মাইনে পায়। অফিসে একটি বাড়তি দায়িত্ব পালনের জন্যই সে ওই টাকা বেশি পায়।

২.৭ দুটি পরাধীন রূপমূলের উদাহরণ দাও ?
উত্তরঃ ‘মানুষকে’ পদের ‘কে’ এবং ‘ফুলওয়ালা’ শব্দের ‘ওয়ালা’ দুটি পরাধীন রূপমূল।

২.৮ বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান এর আলোচ্য বিষয় গুলি কী কী ?
উত্তরঃ বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান এর আলোচ্য বিষয় হলো সমকালীন প্রচলিত ভাষা- ধ্বনিবিজ্ঞান ও ধ্বনিতত্ত্ব, রূপতত্ত্ব ও শব্দার্থ তত্ত্ব।

২.৯ “খালি সে ধাক্কা দিয়ে বেড়ায়”- কে খালি ধাক্কা দিয়ে বেড়ায় ?
উত্তরঃ বিভাব নাটকের নায়ক ওমর আপিস, কলেজ না থাকায় কেবল সে ধাক্কা দিয়ে বেড়ায়।

অথবা,

নানা রঙের দিন নাটকের প্রারম্ভে যে মঞ্চসজ্জার বিবরণ আছে তা নিজের ভাষায় লেখ।
উত্তরঃ মঞ্চ ফাঁকা। জিনিসপত্র ও যন্ত্রপাতি ছড়ানো রয়েছে। মঞ্চের মাঝখানে একটা টুল ওল্টানো আছে। সময় রাত্রি, অন্ধকারে ঢাকা।

২.১০ “আমি দেখি”- কবি কী দেখতে চান ?
উত্তরঃ ‘আমি দেখি’ কবিতার কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় সবুজ গাছ দেখতে চান।

২.১১ “মোরগ ফুলের মতো লাল আগুন”- এখানে ‘কোন’ আগুনের কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ হিমের রাতে শরীর ‘উম’ বা গরম রাখতে দেশোয়ালিরা মাঠে যে আগুন জ্বেলে ছিল সেই আগুনের কথা এখানে বলা হয়েছে।

২.১২ ঝিঙেশাল চাল এবং রামশাল চাল কী কী দিয়ে খায় ?
উত্তরঃ ঝিঙেশাল চালের ভাত নিরামিষ ডাল তরকারি সঙ্গে আর রামশাল চালের ভাত মাছের সঙ্গে খায়।

বিভাগ – ক (নম্বর : ৫০)

১. অনধিক ১৫০ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও : ৫×১=৫

১.১ “ মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়ির অবস্থা শোচনীয় । ” — মৃত্যুঞ্জয় কে ? তার বাড়ির অবস্থা শোচনীয় কেন ? ১ + ৪

উত্তরঃ মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের – ‘মহামন্বন্তর’ গল্পগ্রন্থের অন্তর্গত ‘কে বাঁচায় কে বাঁচে’ গল্পের অন্যতম চরিত্র মৃত্যুঞ্জয়। তিনি একজন শহুরে মধ্যবিত্ত চাকুরিজীবী আদর্শবাদী যুবক।

বাড়ির অবস্থা শােচনীয় হওয়ার কারণঃ মৃত্যুঞ্জয় ফুটপাথে অনাহার মৃত্যুর দৃশ্য দেখার পর থেকে ভেতরে-বাইরে ক্রমশ পালটে যেতে থাকে। অপরাধবােধে দীর্ণ হয়ে সে বাড়িতে ভালাে করে খেতে ও ঘুমােতে পারে না। একবেলা সস্ত্রীক না খেয়ে সেই খাবার সে অভুক্তদের বিলােনাে শুরু করে। এমনকি, মাইনের দিন নিখিলের মাধ্যমে পুরাে বেতনটাই সে ত্রাণ তহবিলে দান করে দেয়। এদিকে অফিসে তার আসা যাওয়ার ঠিক থাকে না। কাজে ভুল করে, প্রায়ই চুপচাপ বসে থেকে ভেবে চলে সে। বাড়িতেও বিশেষ না থেকে শহরের গাছতলায়, ডাস্টবিনের ধারে বা ফুটপাথে পড়ে থাকা মন্বন্তর গ্রস্ত মানুষগুলিকে দেখতে সে ঘুরে বেড়াতে থাকে। মৃত্যুঞ্জয়ের এমন অবস্থার জন্যই তার বাড়ির শােচনীয় অবস্থা হয়েছিল। মৃত্যুঞ্জয়ের এই অবস্থায় তার স্ত্রী শয্যাশায়ী হয়ে পড়ে। মৃত্যুঞ্জয়ের ছেলেমেয়েরা খিদের জ্বালায় মাঝে মধ্যেই চিৎকার করে কাঁদতে থাকে। মৃত্যুঞ্জয়ের অনুপস্থিতিতে তার পরিবারের লােকেদের এমন শােচনীয় অবস্থাই হয়েছিল।

১.২ “শেষ রোদের আলোয় সে দূরের দিকে ক্রমশ আবছা হয়ে গেল।”— কার কথা বলা হয়েছে ? সে ক্রমশ আবছা হয়ে গেল ’ কেন ? ১ + ৪

উত্তরঃ উদ্ধৃতাংশটি প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ’ গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে। শেষ রোদের আলোয় যার দূরের দিকে ক্রমশ আবছা হয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে, সে হলো আলোচ্য গল্পের ধর্মপরিচয়হীন এক থুথুড়ে বুড়ি।

গল্প-শেষের উদ্ধৃতিটি নিঃসন্দেহে ব্যঞ্জনাময়।
গল্পের কাহিনিবিন্যাসে দেখি রাঢ়বঙ্গের শীতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে এক থুথুড়ে বুড়ি বাজার এলাকায় প্রবেশ করে। তারপর ‘ফাঁপি’র প্রবলতার মধ্যেই বট গাছের খোঁদলে রাত্রিযাপন করে। এরপর মেঘমুক্ত সকালে সেখানে নিথর বুড়িকে দেখে লোকজন অনুমান করে নেয় যে সে মৃতা। এই কল্পমৃত্যুর পটভূমিতেই লেখক আনয়ন করেন ভারতের পারস্পরিক ধর্মদ্বন্দ্বে উৎসুক মানুষজনদের হিন্দু-মুসলমান একে অপরের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরে, দ্বন্দ্বযুদ্ধে মেতে ওঠে।

দ্বন্দ্ব যখন চরম সীমায় পৌঁছেছে তখনই লেখক বুড়িকে পুনর্জাগরিত করেন। শুধু তাই নয়—দুই লড়াকু সম্প্রদায়ের নির্বোধ মানুষজনদের কৌতূহলী জিজ্ঞাসার উপর নির্ভীক বুড়ির চলে যাওয়া দেখান। এর মধ্যে দিয়ে লেখক প্রচলিত প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের অসারতার প্রতি তীব্র অবজ্ঞা ছুঁড়ে দিয়েছেন লেখক। মানুষ মানবতা ধারণ করুক—এই লেখকের প্রত্যাশা। তথাকথিত ধার্মিকজন জীবিত, বিপন্ন মানুষকে বাঁচার প্রেরণা দেয় না। কিন্তু মৃত মানুষের ধর্মপ্রমাণে সশস্ত্র হয়ে লড়াই করে। তাই বুড়ির ‘দূরের দিকে ক্রমশ আবছা’ হয়ে যাওয়া যেন মানুষের মানবিক সত্তার, নৈতিকতার অবনমনকেই উপস্থাপিত
করে।

২. অনধিক ১৫০ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও : ৫x১ = ৫

২.১ “সে কখনো করে না বঞ্চনা”– কে, কখনো বঞ্ছনা করে না ? কবি কীভাবে সেই ভাবনায় উপনীত হয়েছেন ? ১ + ৪

উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘রূপনারানের কূলে’ কবিতায় কবি বলেছেন যে, সত্য কখনো বঞ্চনা করে না।

জীবনের শেষ প্রান্তে পৌঁছে কবি যে চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন, আলোচ্য কবিতায় সেই বিশেষ চেতনার প্রকাশ ঘটেছে। জীবনের অন্তিম পর্যায়ে এসে কবি আত্মস্বরূপ উপলব্ধি করতে পেরেছেন। সেই সূত্র ধরেই তিনি সত্যের অপার মহিমা অনুধাবন করেছেন। কবির এই সত্যোপলব্ধি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।

সত্য সম্পর্কে কবি বলেছেন, “সত্য যে কঠিন”। তবে, কাঠিন্য সত্বেও কবি জীবনে চলার পথে সত্যকেই গ্রহণ করেছেন এবং ভালো বসেছেন। কবির ভাষায় “কঠিনেরে ভালোবাসিলাম”।

নিজের দীর্ঘ জীবন-অভিজ্ঞতা থেকে কবি জেনেছেন যে সত্য এবং মিথ্যার মধ্যে সত্যের পথ অবলম্বন করাই শ্রেয়। কারণ, মিথ্যা মানেই বঞ্চনা। মিথ্যার পথ অবলম্বন করে সাময়িক সান্ত্বনা পাওয়া যেতে পারে, কিন্তু সত্যের পথ রোধ করা যায়না। সত্য হল অনিবার্য। মানুষ যতই সত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করুক, সত্যের প্রকাশ একদিন হবেই। আবার, মিথ্যার পথ অবলম্বন করলে একসময় বঞ্চনার শিকার হতে হয়। অপরপক্ষে, সত্য কখনো মানুষকে বঞ্চনা করে না। সেইজন্য মিথ্যার আশ্রয় না নিয়ে প্রথম থেকেই কবি সত্যের প্রতি আস্থা রেখেছেন।

২.২ “ঘুমহীন তাদের চোখে হানা দেয় / কিসের ক্লান্ত দুঃস্বপ্ন।” — কাদের কথা বলা হয়েছে ? তাদের ঘুমহীন চোখে ক্লান্ত দুঃস্বপ্ন হানা দেয় কেন ? ১+৪

উত্তরঃ সমর সেনের ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতা থেকে উদ্ধৃত এই উক্তিটিতে মহুয়ার দেশের কয়লাখনির অবসন্ন শ্রমিকদের কথা বলা হয়েছে।

ঘুমহীন চোখে ক্লান্ত দুঃস্বপ্নের হানা দেওয়ার কারণ—

নগরজীবন থেকে মুক্তিঃ সমর সেন তাঁর ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতায় নগরজীবনের ধূসরতা ও যান্ত্রিকতায় ক্লান্ত মানুষের যন্ত্রণাকে ফুটিয়ে তুলেছেন। এখান থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যই কবিকে আকর্ষণ করে মেঘমদির মহুয়ার দেশ, যেখানে পথের দু-পাশে ছায়া ফেলে রহস্যময় দেবদারু গাছের সারি।

প্রকৃতির বুকে যন্ত্রসভ্যতাঃ কবি আকাঙ্ক্ষা করেন যে, তার ক্লান্তির উপরে মহুয়া ফুল ঝরে পড়ুক। তার চেতনায় ছড়াক স্নিগ্ধ আবেশ। কিন্তু এখানকার সর্বগ্রাসী যান্ত্রিকতায় তার কোনাে সন্ধানই পান না কবি। বরং তার কানে আসে মহুয়া বনের ধারে কয়লাখনির প্রবল শব্দ। শিশিরে ভেজা সবুজ সকালে মহুয়ার দেশের অবসন্ন মানুষদের শরীরেও লেগে থাকে ধুলাের কলঙ্ক। তাঁর স্বপ্নের মহুয়ার দেশও যে আজ যন্ত্রসভ্যতার শিকার। আর তারই বিপন্নতা হানা দেয় সেখানকার মানুষদের দুঃস্বপ্নে। যন্ত্রসভ্যতার ক্ষয়, বিকৃতি আর যান্ত্রিকতার ক্লান্তি থেকে মুক্তি পায় না স্বপ্নের মহুয়ার দেশও। একারণেই তাদের ঘুমহান চোখে ক্লান্ত দুঃস্বপ্ন হানা দেয়।

৩. অনধিক ১৫০ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও : ৫×১=৫

৩.১ “আমাদের মনে হয় এর নাম হওয়া উচিত ‘অভাব নাটক’।” – অভাবের চিত্র ‘বিভাব’ নাটকে কীভাবে প্রকাশ পেয়েছে লেখো। ৫

উত্তরঃ শম্ভু মিত্রের ‘বিভাব’ নাটকে আমরা দেখি, জনৈক ভদ্রলােক পুরােনাে নাট্যশাস্ত্র ঘেঁটে শম্ভু মিত্র রচিত নাটকের নাম দিয়েছিলেন বিভাব। ‘বিভাব’ শব্দটির অর্থ হল মনের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া নয়টি রসানুভূতির কারণ।

লেখকের উপলব্ধিঃ নিজের নাট্যভাবনা ও অভিজ্ঞতার সঙ্গে এই নামের বিরােধ খুঁজে পেয়েছেন স্বয়ং নাট্যকারই। একারণেই তার মনে হয়েছে, তাদের নাটকের নাম হওয়া উচিত অভাব নাটক। প্রবল অভাব থেকেই তাদের এই নাটকের জন্ম।

উপলব্ধির কারণঃ এই নাটকে ভালাে মঞ্চ নেই, নেই আলাে বা ঝালর ইত্যাদি মঞ্চসজ্জার বিবিধ উপকরণ। থাকার মধ্যে শুধু আছে নাটক করার অদম্য আকাঙ্ক্ষা। এর ওপর রয়েছে সরকারের চূড়ান্ত অসহযােগিতাও। এত কষ্ট করে সব কিছু জোগাড় করার পর অভিনয়ের ব্যবস্থা করা হলেও উঠে আসে খাজনার দাবি। পেশাদারি মঞ্চকে যে খাজনা দিতে হয় না, গ্রুপ থিয়েটারকে তা দিতে হয়। সরকারের এই বিমাতৃসুলভ দৃষ্টিভঙ্গিকে তীব্র শ্লেষে বিদ্ধ করে নাট্যকার এরপর নিজের ক্ষোভ উগরে দিয়ে জানান—“…আমরা তাে নাটক নিয়ে ব্যবসা করি না, তাই সরকার আমাদের গলা টিপে খাজনা আদায় করে নেন।”

শেষের কথাঃ এই চূড়ান্ত প্রতিকূলতায় গ্রুপ থিয়েটারের পক্ষে নিজের পায়ে দাঁড়ানাে অনেক সময়েই সম্ভব হয়ে ওঠে না। গ্রুপ থিয়েটারের প্রবল অভাবের এই চিত্রই ‘বিভাব’ নাটকে প্রকাশ পেয়েছে।

৩.২ ‘নানা রঙের দিন’ নাটকটির নামকরণের তাৎপর্য আলোচনা করো। ৫

উত্তরঃ ‘নানা রঙের দিন’ নাটকটির নামকরণের তাৎপর্য—
অজিতেশ বন্দ্যোপাধায়ের ‘নানা রঙের দিন’ নাটকটি হল বৃদ্ধ অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতির সরণি ধরে অভিনয় জীবনের ফেলে আসা দিনগুলিতে পথ হাঁটা। দিলদারের পােশাক পরে শূন্য প্রেক্ষাগৃহে মধ্যরাতে যে মানুষটিকে মঞ্চের উপরে দেখা যায় তিনি আপাতভাবে নেশার ঘােরে আছেন, কিন্তু তার থেকে অনেক বেশি রয়েছেন স্মৃতির ঘােরে। তাঁর অভিনয় জীবনের স্বর্ণযুগ চলে গেছে, ব্যক্তিগত জীবনে তিনি সম্পূর্ণ নিঃসঙ্গ—এই অবস্থায় স্মৃতির উত্তাপে নিজেকে সঞ্জীবিত করতে চেয়েছেন রজনীকান্ত। মঞ্চের উপরে ফেলে আসা জীবনের পয়তান্তলিশটা বছর তাঁকে নাড়া দিয়ে গেছে। মনে পড়েছে একদিন এই অভিনয়ের জন্যই ছেড়ে আসা জীবনের একমাত্র প্রেমকে। অভিনেতার সামাজিক স্বীকৃতি না থাকা তাকে বেদনা দিয়েছে। তার মনে হয়েছে যে, যারা বলেন—’নাট্যাভিনয় একটি পবিত্র শিল্প’, তাঁরা মিথ্যে কথা বলেন। কিন্তু জীবনের সায়াহ্নে সেই অভিনয়েই অহংকারের উপাদান খোঁজেন রজনীকান্ত। রিজিয়া নাটকের বক্তিয়ার, সাজাহানএর ঔরজ্গজেবএইসব চরিত্রে অভিনয়ের স্মৃতি মঞ্চের উপরে দাঁড়িয়ে মাঝরাতে মনে পড়ে আটষট্টি বছরের নিঃসঙ্গ অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের। শিল্পকে যে মানুষ ভালােবেসেছে তাঁর বার্ধক্য নেই, একাকিত্ব নেই, নেই মৃত্যুভয়ও—এ কথা বলেও দীর্ঘশ্বাসের সঙ্গে রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন—“আমাদের দিন ফুরিয়েছে।” এই জীবন সায়াহ্নে এসে অতীতের রঙিন দিনগুলিকে আঁকড়ে ধরে স্মৃতির উত্তাপ খোঁজার চেষ্টা করেছেন নিঃসঙ্গ বৃদ্ধ। সেই নিরিখে নাটকের নামকরণ নানা রঙের দিন’ সার্থক হয়ে উঠেছে।

৪. অনধিক ১৫০ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও : ৫×১=৫

৪.১ “সেই সন্ধ্যায় কোথায় গেল রাজমিস্ত্রিরা ?”– রাজমিস্ত্রিরা কী নির্মাণ করেছিল ? এই প্রশ্নের মাধ্যমে বক্তা কী বলতে চেয়েছেন ? ১+৪

উত্তরঃ বের্টোল্ট ব্রেখটের ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতা থেকে নেওয়া উদ্ধৃত অংশে চীনের প্রাচীর নির্মাণের কথা বলা হয়েছে। রাজমিস্ত্রিরা চীনের প্রাচীর নির্মাণ করেছিল। আধুনিক বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্যের একটি হল চীনের প্রাচীর। বিদেশি আক্রমন প্রতিরোধ করার উদ্দেশ্যে এই প্রাচীর নির্মাণ করা হয়েছিল।

কথামুখঃ ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতায় কবি প্রথাগত ইতিহাসের আড়ালে লুকিয়ে থাকা ইতিহাসের কাহিনি তুলে ধরেছেন পাঠকের সামনে।

নির্মাণকারীর কথাঃ সাত দরজাওয়ালা থিসের জন্য জগৎজোড়া খ্যাতি পেয়েছে তার নির্মাতা রাজা। কিন্তু চোখের আড়ালে থেকে গেছে সেই নির্মাণকার্যের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকরা। ঠিক সেভাবেই চিনের প্রাচীর তৈরির যাবতীয় কৃতিত্ব যে রাজমিস্ত্রিদের, তারাও ইতিহাসে কোনাে স্থান পায়নি।

শ্রমিকের মৃত্যুদানঃ কিন সাম্রাজ্যের আমলে বিদেশি শত্রুর, বিশেষত হুনদের আক্রমণ থেকে আত্মরক্ষার জন্য যে চিনের প্রাচীর তৈরি শুরু হয় এবং পরে হান, সুই কিংবা মিং সাম্রাজ্য যে প্রাচীরকে গড়ে তােলে, তার নির্মাণে অজস্র শ্রমিকের মৃত্যুর সাক্ষ্য ইতিহাসেই পাওয়া যায়। কিন্তু এই ঘটনাও শ্রমজীবী মানুষদের নায়কত্বকে প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি।

অন্য ইতিহাসঃ এই ইতিহাস শুধুই বাইরের উজ্জ্বলতাকে মহিমা দেয়, রাজা অথবা সাম্রাজ্যবাদী শক্তির জয়ধ্বনি করে। তার আড়ালেই থাকে সাধারণ মানুষের রক্ত-ঘাম-কান্না আর শ্রমের আর-এক ইতিহাস।

অচেনা ইতিহাসের সত্যতাঃ পুঁজিবাদী সমাজ সাধারণ শ্রমজীবী মানুষের ইতিহাসকে কখনও স্বীকার করে না। সাধারণ মানুষের চোখ দিয়ে সেই অচেনা ইতিহাসের সত্যতাকে প্রশ্নের আকারে তুলে ধরতে চেয়েছেন কবি ব্রেখট আলােচ্য কবিতায়।

৪.২ “গল্পটা আমাদের স্কুলে শোনানো হল।” — ‘গল্প’টা কী ? স্কুলে গল্পটা শুনে লেখকের কী প্রতিক্রিয়া হয়েছিল ? ৪ + ১

উত্তরঃ কর্তার সিং দুগালের ‘অলৌকিক’ গল্পে গুরু নানকের মহৎ জীবনীর কিছু অংশ তুলে ধরা হয়েছে। কোনো এক ভয়ংকর গ্রীষ্মের দুপুরে, গুরু নানক তাঁর শিষ্যদের নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে এসে পৌছলেন হাসান আবদালের জঙ্গলে। গুরু নানকের অন্যতম শিষ্য মর্দানা জানাল যে তার জল তেষ্টা পেয়েছে। গুরু নানক তাকে জানালেন যে পাহাড়ের চুড়োতে বলী কান্ধারীর আশ্রমের কুয়োতেই জল পাওয়া যাবে। গুরুর কথামতো মর্দানা তিন বার বলী কান্ধারীর আশ্রমে গিয়েছিল। কিন্তু বলী কান্ধারী তাকে জল দিতে অস্বীকার করেন।

মর্দানা ব্যর্থ হয়ে নিচে নেমে আসার পর গুরু নানক তাকে সামনের পাথরটা তুলতে বলেন। পাথর তোলা মাত্রই জলের স্রোত দেখা গেল এবং মর্দানার তেষ্টা মিটল। ওদিকে বলী কান্ধারীর কুয়ো ততক্ষণে জলশূন্য হয়ে গেছে। নিচে বাবলা গাছের তলায় গুরু নানক শিষ্যদের নিয়ে বসেছিলেন। বলী কান্ধারী রেগে পাথরের একটা চাঙড় নীচের দিকে গড়িয়ে দেন ৷ গুরু নানক সকলকে শান্তস্বরে ‘জয় নিরংকর’ ধ্বনি দিতে বলেন এবং পাথরটা কাছে আসতেই তিনি হাত দিয়ে থামিয়ে দিলেন। সেই পাথরের গায়ে নাকি এখনো গুরু নানকের হাতের ছাপ রয়ে গেছে

এই গল্পটি লেখক শুনেছিলেন তার মায়ের কাছে। কিন্তু গল্পের শেষ অংশটা তার বিশ্বাস হত না কারণ গড়িয়ে পড়া পাথরের চাঙড় হাত দিয়ে থামানো কার্যত অসম্ভব। লেখকের কাছে এই ঘটনা অলৌকিক বলে হয়েছিল।

৫. অনধিক ১৫০ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও : ৫×১=৫

৫.১ “আর এক রকমের প্রথা আছে – নানকার প্রথা।”— নানকার প্রজাদের অবস্থা কেমন ছিল ? পরে তাদের অবস্থার কী পরিবর্তন হয়েছিল ? ৩+২

উত্তরঃ লেখক সুভাষ মুখোপাধ্যায় ‘ছাতির বদলে হাতি’ রচনায় গারো পাহাড় ও পাহাড়তলির প্রজাদের দুরবস্থার বর্ণনা প্রসঙ্গে নানকার প্রজাদের কথা পৃথকভাবে আলোচনা করেছেন। জমিদার বা তালুকদারের যেসব ভৃত্য স্বত্ত্বহীনভাবে চাষজমি ভোগ করত, তারাই ছিল নানকার প্রজা। অন্য প্রজাদের তুলনায় নানকার প্রজাদের অবস্থা ছিল আরও দুর্বিষহ। জমির ফসল বা আম-কাঁঠালে তাদের কোনো অধিকার ছিল না। জমি জরিপ করার পর তাদের প্রত্যেকের জন্য আড়াই টাকা পর্যন্ত রাজস্ব ধার্য হত। সেই খাজনা দিতে না পারলে তহশিলদার নানকার প্রজাকে কাছারিতে নিয়ে গিয়ে পিছমোড়া ক’রে বেঁধে মারধর করত এবং গুদামঘরে আটকে রাখত। তারপর নিলাম ডেকে সেই প্রজার সমস্ত সম্পত্তি খাসদখল করতেন জমিদার বা তালুকদার | মহাজন তাদের কাছ থেকে এক মনের জন্য দ্বিগুণ পরিমাণ ধান আদায় করতেন।

পরবর্তীকালে গারো পাহাড়ের নানকার-সহ সমগ্র প্রজা কমিউনিস্ট পার্টির দ্বারা প্রভাবিত হয়ে জেগে ওঠে। এর ফলস্বরূপ তারা তখন জমিদার-মহাজন পুলিশের অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়। ক্রমশ তারা তাদের অধিকার এবং বিশেষভাবে সম্মান আদায় করতে সক্ষম হয়। পুলিশ বা তথাকথিত ভদ্রলোকরা আর তাই তাদের অসম্মান বা অশ্রদ্ধা করতে পারেন না। অন্যদিকে, হাল-বলদের অভাবের কারণে তারা গাঁতা পদ্ধতিতে অর্থাৎ সম্মিলিতভাবে চাষাবাদ করা শুরু করে এবং গরিব চাষির কাজ অন্যরা বিনা পারিশ্রমিকে করে দিতে থাকে।

৫.২ “গাঁয়ের লোকে ঠাট্টা করে বলে— চোট্টা সাধুর ছেলে হবে নির্ঘাত বিশে ডাকাত।”— ‘সাধু’ কে ? ‘মেঘের গায়ে জেলখানা’ রচনাংশে সাধুর যে পরিচয় পাওয়া যায় তা নিজের ভাষায় লেখো। ১ + ৪

উত্তরঃ বাস্তববাদী সমাজসচেতন লেখক সুভাষ মুখোপাধ্যায়রচিত ‘আমার বাংলা’ গ্ৰন্থে সংকলিত ‘মেঘের গায়ে জেলখানা’ রচনা থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশটিতে বক্সা জেলে বন্দী জনৈক কয়েদি হলেন সাধু। আগে ছিল ছিঁচকে চোর, জেল থেকে পাকা সিঁধেল চোর হয়ে বেরিয়ে আসে সাদা গাঁজার কলকেতে চোখ রাঙানো সাধুচরণ।

পঞ্চাশ বছরের সাধুচরণের গায়ে মাংস একেবারেই নেই। তার বাড়ি জয়নগরের কাছে এক গ্রামে।ছেলে বেলায় বাবা মা মারা যায় তার। আত্মীয়দের বাড়িতে জায়গা হয়নি তার। তাই পেটের জ্বালায় সে ছিঁচকে চুরি করতে বাধ্য হয়। পরে হাতে নাতে ধরা পড়ে জেল হয় এবং জেল থেকে বেরোয় পাকা সিঁধেল চোর হয়ে। তার পর থেকে অনেক বার জেলে এসেছে সাধুচরণ।

এক সময় সংসার করার মন হওয়ায় সাধুচরণ বিয়ে করেছিল।চোরাই পয়সায় কিছু জায়গা জমিও কিনেছিল।তার একটা ছোট্ট ছেলেও আছে। কিন্তু রোজ রাতের প্রহরে প্রহরে চৌকিদারের খবরদারি ইচ্ছা থাকলেও তাকে ভালো থাকতে দেয়নি। যেখানে যা কিছু হোক থানায় সাধুচরণের ডাক পড়ত। মোটা রুলের গুঁতো আর পকেটের পয়সা ঘুষ দিয়ে তবেই ছাড়া পেত।

সব কিছু বুঝে শুনে শেষ পর্যন্ত চুরি করে জেলের ভাত খাওয়াই ভালো বলে মনে করেছে সাধুচরণ। তবে পড়ে থাকা শুকনো জমি আর ছেলের জন্য তার মন কেমন করে।

৬. অনধিক ১৫০ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও : ৫×১=৫

৬.১ শব্দার্থ পরিবর্তনের ধারাগুলি উল্লেখ করে যে-কোনো দুটি ধারার উদাহরণসহ পরিচয় দাও। ১+২+২

উত্তরঃ ভাষা প্রবাহিত নদীরই মতো। নদী যেমন তার গতিপথ প্রায়ই পরিবর্তন করে, ভাষারও তেমনই রূপের পরিবর্তন ঘটে, অর্থেরও পরিবর্তন ঘটে। কালের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বাংলার মতো জীবন্ত ভাষায় শব্দার্থের এরূপ পরিবর্তন খুবই স্বাভাবিক। ফলে এই ভাষার বেশকিছু শব্দ তাদের মূল অর্থটিকে প্রসারিত করে, কখনও সংকুচিত করে, কখনও মূল অর্থটির উন্নতি ঘটে, আবার অবনতি ঘটে, এমনকি সম্পূর্ণ নূতন অর্থে প্রযুক্ত হয়।
শব্দার্থ পরিবর্তনের ধারা গুলিকে ভাষাবিজ্ঞানীরা পাঁচটি ভাগে ভাগ করেছেন— (১) অর্থের বিস্তার (২) অর্থসংকোচ (৩) অর্থসংক্রম (৪) অর্থের উন্নতি (৫) অর্থের অবনতি।

(১) অর্থ বিস্তার বা সম্প্রসারণঃ কোন শব্দ যখন কোন ব্যক্তি বা বস্তুর বিশেষ ধর্ম বা গুণকে অতিক্রম করে, বহু বস্তুর সাধারণ ধর্ম ও গুণের পরিচায়ক হয়ে ওঠে, তখন শব্দের অর্থের বিস্তার ঘটে।

যেমন— ‘ধন্য’ শব্দের আদি অর্থ ছিল ‘ধনশালী ব্যক্তি’। কিন্তু এখন অর্থ বিস্তারের ফলে ‘ধন্য’ বলতে ‘সার্বিক সৌভাগ্যবান ব্যক্তিকে’ বোঝায়। ‘বর্ষ’ শব্দের আদি অর্থ ছিল ‘বর্ষাকাল’, এখন সম্প্রসারিত অর্থ হয়েছে ‘বৎসর বা সারা বছর’। ‘তৈল’ শব্দের আদি অর্থ ছিল ‘তেলের নির্যাস’, এখন সম্প্রসারিত হয়েছে বিভিন্ন দানাশস্য থেকে উৎপন্ন তরল নারিকেল থেকে উৎপন্ন তরল এবং খনিজ কিছু কিছু তরলকে বলা হয়। ‘বেনারসি’ শব্দের অর্থ ছিল বেনারসে উৎপন্ন যেকোনো জিনিস, বিশেষভাবে শাড়ি। এখন অর্থ হয়েছে বেনারস ছাড়া অন্যত্র উৎপন্ন অনুরূপ শাড়ি।

(২) অর্থসংকোচঃ শব্দের অর্থ যখন ব্যাপকতা হারিয়ে বিশেষ সংকীর্ণ অর্থে প্রযুক্ত হয় তখন সেখানে শব্দার্থের সংকোচ হয়।
যেমন—’মৃগ’ শব্দের আদি অর্থ ছিল যে কোন পশু। এখন সংকুচিত অর্থ হয়েছে ‘হরিণ’। ‘পঙ্কজ’ শব্দের আদি অর্থ ছিল ‘পঙ্কে জাত বস্তু’। এখন সংকুচিত হয়েছে ‘পদ্মফুল’। ‘অন্ন’ শব্দের অর্থ ছিল ‘খাদ্য’। এখন সংকোচিত অর্থ হলো ‘ভাত’। ‘সন্তান’ শব্দের আদি অর্থ ছিল ‘সম্যক বিস্তার’। এখন সংকুচিত হয়েছে ‘পুত্র বা কন্যা’।

৬.২ মুণ্ডমাল শব্দ কাকে বলে ? উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে দাও। ৫

উত্তরঃ রূপতত্ত্বের আলোচনায় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল মুন্ডমাল শব্দ, ইংরেজিতে যাকে বলা হয় অ্যাক্রোনিম (Acronym)।

মুন্ডমাল শব্দঃ সাধারণ অর্থে মুন্ডমাল বলতে বোঝায় মুন্ড বা মস্তকের মালা। কিন্তু রূপতত্ত্বের আলোচনায় মুন্ডমাল হল বিশেষ এক ধরনের শব্দ বা শব্দ গঠনের প্রক্রিয়া। কোনো শব্দগুচ্ছের আদ্য অক্ষর (অর্থাৎ, প্রথম অক্ষর) নিয়ে গঠিত শব্দকে মুন্ডমাল শব্দ বা অ্যাক্রোনিম বলে। যেমন- লঘিষ্ঠ সাধারণ গুণিতক শব্দগুচ্ছের প্ৰথম অক্ষরগুলি নিয়ে গঠিত হয়েছে ল.সা.গু. শব্দটি। এই ল.সা.গু. শব্দটি হল মুন্ডমাল শব্দ। একইরকমভাবে, গ.সা.গু. (গরিষ্ঠ সাধারণ গুণনীয়ক), বি.বা.দী. (বিনয়- বাদল-দীনেশ) শব্দগুলি বাংলা মুন্ডমাল শব্দের উদাহরণ।

বাংলা মুন্ডমাল শব্দের সংখ্যাটা কম তবে ইংরেজি ভাষায় এই জাতীয় শব্দের সংখ্যা প্রচুর এবং সেগুলি বাংলাতেও বহুল প্রচলিত। যেমন, ভি.আই.পি (ভেরি ইম্পরট্যান্ট পার্সন), এম.এল.এ (মেম্বার অফ লেজিসলেটিভ এসেম্বলি) ইত্যাদি।

৭. অনধিক ১৫০ শব্দে যে-কোনো দুটি প্রশ্নের উত্তর দাও : ৫×২=১০

৭.১ বাংলা গানের ধারায় দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের অবদান সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো।

উত্তরঃ বাংলা সঙ্গীতের ধারায় রবীন্দ্রনাথের সমসাময়িক আর একজন সঙ্গীত ব্যক্তিত্ব হলেন দ্বিজেন্দ্রলাল রায় । তাঁর পিতা কার্তিকেয়চন্দ্র রায় ছিলেন কৃষ্ণনগর রাজসভার দেওয়ান এবং উনিশ শতকের প্রথম দিকে খেয়াল-চর্চাকারীদের মধ্যে অন্যতম । সেই সুত্রে দ্বিজেন্দ্রলালেরও ভারতীয় মার্গসঙ্গীতের উপর বিশেষ দখল ছিল। ১৮৮৪ খ্রি ইংল্যান্ডে বসবাসকালীন বিদেশি সুরের সান্নিধ্যে আসেন এবং নিজ প্রতিভাবলে সেগুলি আত্মস্থ করেন। দ্বিজেন্দ্রলালের গানে প্রাচ্য এবং পাশ্চাত্যের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। ধ্রুপদ, খেয়াল, টপ্পা, বাউল, স্বদেশী গান এবং প্যারোডি – ভারতীয় সঙ্গীতের বিচিত্র শাখায় তাঁর অনায়াস বিচরন ছিল। ভারতীয় সঙ্গীতের কমনীয়তা এবং পাশ্চাত্য সঙ্গীতের প্রানশক্তি দ্বিজেন্দ্রলালের গানগুলিকে নতুন মাত্রা দিয়েছে।

দ্বিজেন্দ্রলালের সবচেয়ে বেশী খ্যাতি
নাট্যকার হিসেবে। প্রায় সমস্ত নাটকেই তিনি সার্থকভাবে গানের প্রয়োগ করেছেন। ‘সাজাহান’, ‘চন্দ্রগুপ্ত’, ‘রানা প্রতাপ’, ‘মেবার পতন’ প্রভৃতি নাটকগুলির গানও বিশেষ জনপ্রিয় হয়েছিল। তাঁর ‘সোরাবরুস্তম’ নাটকটি বিদেশি অপেরার ঢঙে রচিত হয়েছিল। আবার কোরাস গানের প্রয়োগেও তিনি পথিকৃৎ ছিলেন।

তাঁরই সুযোগ্য পুত্র দিলীপ কুমার রায় দ্বিজেন্দ্রলালের গানগুলিকে ৫ ভাগে ভাগ করেছেন। যথা- পূজা, দেশ, প্রেম, প্রকৃতি, এবং বিবিধা তবে স্বদেশসঙ্গীতগুলির কারনেই দ্বিজেন্দ্রলাল চিরস্মরনীয় থাকবেন । ‘ধনধান্যে পুষ্পে ভরা’, ‘বঙ্গ আমার জননী আমার’ প্রভৃতি গানগুলি বাঙালির অন্তরে স্থায়ী আসন লাভ করেছে। ‘আর্যগাথা’ গীতি সংকলনে তাঁর গানগুলি লিপিবদ্ধ রয়েছে।

৭.২ বঙ্গদেশের চিত্রকলার ইতিহাসে ভাস্কর ও চিত্রকর রামকিঙ্কর বেইজের অবদান ও স্বকীয়তা বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করো।

উত্তরঃ আধুনিক ভারতীয় ভাস্কর্যকলার একজন বিশিষ্ট শিল্পী ছিলেন রামকিঙ্কর বেইজ (১৯০৬- ১৯৮০)। তাঁকে শুধু একজন শিল্পী বললে কম বলা হবে, তিনি ছিলেন একজন শিল্পসাধক। রামকিঙ্কর ছিলেন একাধারে চিত্রশিল্পী এবং ভাস্কর।

রামকিঙ্কর ১৯০৬ সালে বাঁকুড়ার
জুগিপাড়ায় এক দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। কুমোরদের কাজ দেখে তিনি বড় হয়েছেন। ছোটবেলা থেকেই কাদা দিয়ে মূর্তি গড়েছেন। এমনি করেই ভাস্কর্য শিল্পের প্রতি তার আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছিল। ১৯২৫ সালে ‘প্রবাসী’র সম্পাদক রমানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের পরামর্শে তিনি বিশ্বভারতীর কলাভবনে ভর্তি হন। সেখানে আচার্য নন্দলাল বসু ছিলেন তাঁর শিক্ষক। কথিত আছে, কলাভবনে তাঁর কাজের নমুনা দেখে নন্দলাল প্রথম দিনই বলেছিলেন, “তুমি সবই জানো, আবার এখানে কেন?” রামকিঙ্কর ছিলেন একজন স্বশিক্ষিত শিল্পী ছিলেন, তবে এই শান্তিনিকেতনেই তাঁর ভাস্কর্যকলা পূর্ণমাত্রায় বিকাশ করেছিল।

বিশেষত্ব—

১) রামকিঙ্করের ছবিগুলি ছিল প্রকৃতিকেন্দ্রিক।

২) প্রান্তিক মানুষের দৈনন্দিন জীবনেই ছিল তাঁর আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু। তাঁর বহু শিল্পকর্মে এসব মানুষের দেখা মেলে।

৩) উন্মুক্ত ভাস্কর্য নির্মাণে তিনি সিমেন্ট ও পাথর ব্যবহার করতেন।

৪) তিনি পাশ্চাত্য শিল্পীদের মত মডেল ব্যবহার করতেন।

৫) ভাস্কর্যে টেরাকোটা রিলিফ ও পাথর খোদাইয়ে এবং চিত্রশিল্পে জল ও তেলরঙে তিনি বিশেষ পারদর্শিতা অর্জন করেন।

উল্লেখযোগ্য শিল্পকর্ম- চিত্রশিল্পী হিসেবে রামকিঙ্করের প্রতিভার পরিচয় পাওয়া যায় ‘কুকুর সাথে রমণী’, ‘পিকনিক’, ‘ঝড়ের পরে’, ‘বিনোদিনী’ প্রভৃতি ছবিতে। তাঁর উল্লেখযোগ্য ভাস্কর্যের নমুনা হল ‘সুজাতা’, ‘সাঁওতাল দম্পতি’, ‘হাটের পথে’ প্রভৃতি।

পুরস্কার ও সম্মাননা- তিনি বিশ্বভারতীর ‘দেশিকোত্তম’, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়
প্রদত্ত ডি. লিট এবং ভারত সরকারের খেতাব ‘পদ্মভূষণ’ লাভ করেছেন।

৭.৩ বাংলা সিনেমায় সত্যজিৎ রায়ের অবদান সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো ।

উত্তরঃ বাংলা চলচ্চিত্রের ধারায় সত্যজিৎ রায়ের অবদান অসামান্য। তিনি বাংলা চলচ্চিত্রের ধারায় এক মাইল ফলক রূপে পরিগণিত হন। শুধু বাংলা নয় তিনি সমস্ত বিশ্বের চলচ্চিত্রে এক মর্যাদার সম্মান দাবি করেন। 1955 সালে তার কৃতকর্ম কান ফ্লিম ফেস্টিভালে আন্তর্জাতিক পুরষ্কার পায়, এবং ভারত সরকার তাকে সিনেমার শ্রেষ্ঠ প্রযোজক এর কারণে ভারতরত্ন উপাধিতে ভূষিত করেন।

পথের পাঁচালী ছিল তার জীবনের প্রথম অভিজ্ঞান। গ্রাম্য জীবনের রহস্যে ঘেরা পথের পাঁচালী ছিল উদার মানবিক জীবনের এক প্রতিচ্ছবি। সেই কারণে এই সিনেমা দেশ ছেড়ে ইউরোপে এমন কি আমেরিকাতেও জনপ্রিয়তা পেয়েছিলো।

পথের পাঁচালীর অপুর কাহিনী কে সম্পূর্ণ করার জন্য তিনি পরবর্তী সময়ে প্রযোজনা করেন – অপরাজিত, অপুর সংসার, এই সিনেমা দুটিকে। এছাড়াও তার কয়েক্তি বিখ্যাত সিনেমা হলো – নায়ক, জলসাঘর, দেবী, তিন কন্যা, কাঞ্চনজঙ্ঘা, মহানগর, গুপিগাইন বাঘাবাইন, অরণ্যের দিনরাত্রি, প্রতিদ্বন্দ্বী, ওসনি সংকেত, ও আগন্তুক ইত্যাদি।

জীবিত সময় কালের মধ্যে সত্যজিৎ রায় প্রায় 36 টি সিনেমা তৈরি করেছিলেন। বিচিত্র বিষয়ের সমাহারে তিনি যে নতুন সিনেমার নতুন ধারণা সৃষ্টি করেছিলেন সেই কারণেই তিনি আজও সিনামে জগতে স্বতন্ত্র হলে আছেন। 1992 সালে সত্যজিৎ রায় অস্কার বিজয়ী পরিচালক হিসাবে স্বীকৃতি পান। পরবর্তী কালের কিছু বিখ্যাত পরিচালক – আইভরি, আব্বাস কাইরস্তমি, ইলিয়ানাক জল প্রমুখ তাকে অনুসরণ করেছিলেন বলে মনে করা হয়।

৭.৪ বাঙালির ক্রীড়া ঐতিহ্যে ফুটবলের সূত্রপাত কীভাবে হয়েছিল ? এই পর্বের ফুটবলের সঙ্গে কোন্ বিখ্যাত ব্যক্তিত্বের নাম জড়িয়ে আছে ? বাংলার ফুটবলের কোন্ ঘটনা, কীভাবে ভারতের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে উজ্জীবিত করেছিল ? ১ + ১ + ৩

উত্তরঃ বাঙালির ক্রীড়া ঐতিহ্যে ফুটবলের সূত্রপাত হয়েছিল ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে। কলকাতায় পুরনো কেল্লার মাঠে ব্রিটিশ নাবিকদের ফুটবল খেলা দেখে বাঙালি সৈনিকদের ফুটবলের সঙ্গে পরিচিতি ঘটেছিল।

এই পর্বের ফুটবলের সঙ্গে যে বিখ্যাত মানুষটির নাম জড়িয়ে আছে তিনি হলেন নগেন্দ্রপ্রসাদ সর্বাধিকারী।

বাঙালির ক্রিড়া সংস্কৃতিতে ফুটবলের একটি বিশিষ্ট স্থান রয়েছে। ব্রিটিশদের মাধ্যমে বাংলাতে ফুটবলের প্রচলন হলেও বাংলার ফুটবল ইংল্যান্ডের থেকে খুব বেশি পিছিয়ে ছিল না। ইংল্যান্ডের অনুকরণে কলকাতাতে বেশ কয়েকটি ফুটবল ক্লাবের জন্ম হয়েছিল এবং বিভিন্ন ফুটবল প্রতিযোগিতাও শুরু হয়েছিল। ১৮৯৩ সালে গঠন করা হয় ইন্ডিয়ান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন এবং সেই বছরই শোভাবাজার ক্লাবের উদ্যোগে প্রবর্তন করা হয় আইএফএ শিল্ড। ফুটবলপ্রেমী বাঙালিদের মধ্যে আইএফএ শিল্ড অত্যন্ত জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল।

কিন্তু IFA শিল্ড শুরু হওয়ার পর থেকে টানা ১৮ বছর ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর দখলে ছিল। ১৯১১ সালে East Yorkshire Regiment কে হারিয়ে বিজয়ী হয় মোহনবাগান ক্লাব। ঐতিহাসিক এই জয় ভারতের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে উজ্জীবিত করেছিল কারণ এই প্রথম ব্রিটিশদের খেলাতে ব্রিটিশদেরকেই পরাজিত করেছিল ভারতীয়রা। এই জয় ছিল ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ভারতীয়দের নৈতিক জয়।

৮. নিম্নলিখিত যেকোনো একটি বিষয় নির্বাচন করে নির্দেশ অনুসারে কমবেশি ৪০০ শব্দের মধ্যে একটি প্রবন্ধ রচনা করো : ১০×১=১০

৮.২ প্রদত্ত অনুচ্ছেদটিকে প্রস্তাবনা বা ভূমিকাস্বরূপ গ্রহণ করে বিষয়ের গভীরে প্রবেশ করে, পরিণতিদানের মাধ্যমে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রবন্ধরচনা করো :

শক্তির সন্ধানে মানুষ

অঙ্গার সম্পদ কিংবা মাটির তেল চিরদিন থাকবে না। ভাণ্ডার হতে যা খরচ হয়, তার প্রতিপূরণ হচ্ছে না। যে অবস্থায় এইসব সম্পদ সঞ্চয় সম্ভব হয়েছিল, সময়ের সঙ্গে তারও হয়েছে আমূল পরিবর্তন। তাই আজকের সাবধানী মহলে শোনা যায় সতর্কতার বাণী। আর কতকাল অঙ্গার বা তেল মনুষ্য সমাজের নিত্যবর্ধমান চাহিদা জোগাতে পারবে তারও হিসাব হচ্ছে মাঝে মাঝে, আর মানুষ ছুটছে নতুন কয়লাখনির সন্ধানে, নতুন তেলের উৎস মাটির বাইরে আনতে।

৮.৩ প্রতিপক্ষের যুক্তির অসারতা প্রমাণ করে সপক্ষে যুক্তিক্রম বিন্যাস করে প্রবন্ধরচনা করো :

বিতর্কের বিষয় : আধুনিক জীবনে বৃদ্ধাবাস অপরিহার্য

মতের পক্ষে : আধুনিক সভ্যতায় অধিকাংশ পরিবার ছোটো পরিবার। বেশিরভাগ পরিবারে সন্তানসংখ্যা একটি। আবার শিক্ষা ও জীবিকার তাগিদে তাদের অনেকেই পাড়ি দেয় বিদেশে। যাদের সন্তান দীর্ঘকাল বা আজীবন বিদেশে থাকতে বাধ্য হয় বা স্বেচ্ছায় বেছে নেয় প্রবাসী জীবন, তাদের পিতা – মাতার জীবনে নিত্যসঙ্গী একাকীত্ব। যা প্রবাসী সন্তানকেও চিন্তিত করে তোলে। বৃদ্ধবয়সে অবসর যাপনের জন্য প্রয়োজন সমবয়স্ক সঙ্গীর। বৃদ্ধাবাসে প্রায় কাছাকাছি বয়সের অনেক মানুষ একত্রে থাকেন। পারস্পরিক সাহচর্য তাদের শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। সুতরাং , সন্তানের সান্নিধ্য থেকে বঞ্ছিত হয়ে একাকীত্বের যন্ত্রণা ভোগ না করে বয়স্ক মানুষের বৃদ্ধাশ্রমের সিদ্ধান্তই শ্রেয়।

৮.৪ প্রদত্ত সূত্র ও তথ্য অবলম্বনে একটি প্রবন্ধরচনা করো :

বেগম রোকেয়া

জন্ম : ৯ ডিসেম্বর ১৮৮০ , বর্তমান বাংলাদেশের রংপুর জেলার পায়রাবন্দ গ্রামে।
পিতা : জহীরুদ্দিন আবু আলী হায়দার সাবের।
মাতা : রাহাতুন্নেসা চৌধুরি।
সমসাময়িক সমাজ : পর্দাপ্রথা প্রচলিত। খানদানি ফারসি বা উর্দু ভাষা শেখা যাবে। বাংলা বা ইংরাজি নয়।
পারিবারিক বৃত্ত শিক্ষালাভ : রক্ষণশীল পরিবার। দিদি করিমুন্নেসা এবং দাদা ইব্রাহিম সাবেরের প্রেরণা ও সহযোগিতায় বাংলা ও ইংরেজি শিক্ষা।
বিবাহ : ১৬ বছর বয়সে, পাত্র সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেন। ওড়িশা কণিকা স্টেটের ম্যানেজার।
বিবাহিত জীবন : স্বামীর কাছে ইংরেজি শিক্ষা। লিখলেন ‘Sultana’s Dream’, লেখিকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ। দুই কন্যা। ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে সাখাওয়াতের মৃত্যু৷
সাহিত্যরচনার উদ্দেশ্য : দেশহিত ও মানুষের মঙ্গলসাধন।
সাহিত্যকৃতি : ‘পিপাসা’, ‘মতিচুর’, ‘পদ্মরাগ’, ‘অবরোধবাসিনী’ ।
উল্লেখযোগ্য কীর্তি : ‘সাখাওয়াত’, ‘মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল’ (১৯১১), নিখিলবঙ্গ মুসলিম মহিলা সমিতি’ বা ‘আঞ্জুমন-ই-খাওয়াতীনে ইসলাম’ (১৯১৬)।
মৃত্যু : ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দের ৯ ডিসেম্বর।

উচ্চমাধ্যমিক বিগত 10 বছরের প্রশ্নপত্র
201520162017
201820192020
202120222023
202420252026

HS HISTORY QUESTION 2022, WEST BENGAL HS PREVIOUS YEAR QUESTION PAPER, উচ্চ উচ্চ মাধ্যমিক  পরীক্ষার প্রশ্ন 2016, উচ্চ উচ্চ মাধ্যমিক  পরীক্ষার প্রশ্ন 2017, উচ্চ উচ্চ মাধ্যমিক  পরীক্ষার প্রশ্ন 2018, উচ্চ উচ্চ মাধ্যমিক  পরীক্ষার প্রশ্ন 2019, উচ্চ উচ্চ মাধ্যমিক  পরীক্ষার প্রশ্ন 2020, উচ্চ উচ্চ মাধ্যমিক  পরীক্ষার প্রশ্ন 2022, উচ্চ উচ্চ মাধ্যমিক  ইতিহাস পরীক্ষার প্রশ্ন, উচ্চ উচ্চ মাধ্যমিক  ইতিহাস সাজেশন, বিগত বছরের প্রশ্ন উচ্চউচ্চ মাধ্যমিক  ইতিহাস প্রশ্ন

উচ্চ উচ্চ মাধ্যমিক  প্রশ্নপত্র (West Bengal Board Higher Secondary Question Papers) সংক্রান্ত জিজ্ঞাসিত কিছু প্রশ্ন (FAQs)

Q.1. উচ্চ মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্র কী কী ভাষায় পাবো?

Ans. পশ্চিমবঙ্গ বোর্ডের উচ্চ উচ্চ মাধ্যমিক  পরীক্ষার প্রশ্ন ইতিহাস, ইংরেজি, হিন্দি, উর্দু, নেপালি, ওড়িয়া, পাঞ্জাবি, তেলুগু সহ বিভিন্ন ভাষায় উপলব্ধ।

Q.2. Higher Secondary 2024 একটি বিষয়ের প্রশ্নপত্রে কটি বিভাগ থাকবে?

Ans. উচ্চ মাধ্যমিকে (XII)-এ থিয়োরি বিভাগে দুটি অংশ থাকে, Part-A এবং Part-B। Part-A তে Traditional ধরনের প্রশ্ন থাকে, কিন্তু Part-B প্রশ্নপত্রটি Question cum Answer Type Booklet হয় যেখানে মূলত প্রতিটি  1 নম্বরের MCQ (Multiple Choice Question) এবং SAQ (Short Answer Type Question) প্রশ্ন থাকে।

Q.3. আমি কি  Part-A এর আগে Part-B এর উত্তর করতে পারি?

Ans. উচ্চ মাধ্যমিকের Part-B প্রশ্নপত্রটি, Part-A এর পরে দেওয়া হয় কারণ এটি একটি নির্দিষ্ট সিরিজ অনুযায়ী সাজানো থাকে, তাই তোমাকে Part-A আগে উত্তর করে নিতে হবে।

Q.4.  HS 2024 এর মডেল প্রশ্ন পাওয়া যায় কি?

Ans. হ্যাঁ, তুমি উচ্চ উচ্চ মাধ্যমিক  শিক্ষা সংসদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে এটি ডাউনলোড করতে পারো।

Q.5.  HS 2024 এর আগের বছরের প্রশ্ন কোথায় পেতে পারি?

Ans.  বিগত বছরগুলিতে যারা পরীক্ষা দিয়েছে তাদের থেকে তুমি সরাসরি উচ্চ মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করতে পারো। এছাড়া পর্ষদের অফিসের সেলস কাউন্টার থেকেও তুমি বিগত বছরগুলির প্রশ্ন সংগ্রহ করতে পারো।

Q.6.  উচ্চ উচ্চ মাধ্যমিক  MCQ তে নেগেটিভ মার্কিং থাকে কি?

Ans. না, পশ্চিমবঙ্গ বোর্ডের উচ্চ মাধ্যমিকের MCQ-তে কোনো নেগেটিভ মার্কিং থাকে না।

Q.7.  উচ্চ উচ্চ মাধ্যমিক  নতুন পুরোনো সিলেবাসের জন্য কি আলাদা প্রশ্ন হয়?

Ans. প্রতিবছর একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষা একইসাথে নেওয়া হয় পুরোনো ও নতুন সিলেবাসের (Old and New Syllabus) ওপর। পুরোনো সিলাবাসের প্রশ্নপত্র সম্পর্কে শিক্ষার্থীরা ইতিমধ্যেই অবগত রয়েছে এবং সেই একই ধরনের প্রশ্নপত্র 2023 উচ্চ উচ্চ মাধ্যমিক  পরীক্ষাতেও ব্যবহার করা হবে। নতুন সিলেবাসের জন্য 2018 এর পদ্ধতি অনুসারে পরীক্ষা গ্রহন করা হবে।

উচ্চ উচ্চ মাধ্যমিক  পরীক্ষার প্রশ্ন 2022, Wbchse , Hs History Suggestion, উচ্চ উচ্চ মাধ্যমিক  ইতিহাস সাজেশন | Higher Secondary History Suggestion এর লিঙ্ক নিচে দেওয়া আছে এবার উচ্চ উচ্চ মাধ্যমিক  ইতিহাস (Higher Secondary History/ Wbchse Hs History) পরীক্ষার জন্য খুব ইম্পর্টেন্ট প্রশ্নত্তরের জন্য West Bengal Hs Previous Year Question Paper || বিগত বছরের প্রশ্ন উচ্চউচ্চ মাধ্যমিক  ইতিহাস প্রশ্নগুলো দেখে নেওয়া দরকার উচ্চ উচ্চ মাধ্যমিক  পরীক্ষার প্রশ্ন 2019 , উচ্চ উচ্চ মাধ্যমিক  পরীক্ষার প্রশ্ন 2018, উচ্চ উচ্চ মাধ্যমিক  পরীক্ষার প্রশ্ন 2017, উচ্চ উচ্চ মাধ্যমিক  পরীক্ষার প্রশ্ন 2016, উচ্চ উচ্চ মাধ্যমিক  পরীক্ষার প্রশ্ন 2020 , উচ্চ উচ্চ মাধ্যমিক  পরীক্ষার প্রশ্ন ২০১৭ , উচ্চ উচ্চ মাধ্যমিক  পরীক্ষার প্রশ্ন ২০১৮, উচ্চ উচ্চ মাধ্যমিক  পরীক্ষার প্রশ্ন ২০১৬, উচ্চ উচ্চ মাধ্যমিক  পরীক্ষার প্রশ্ন ২০২০ , উচ্চ উচ্চ মাধ্যমিক  পরীক্ষার প্রশ্ন ২০১৯ || উচ্চ উচ্চ মাধ্যমিক  পরীক্ষার প্রশ্ন ||West Bengal Hs Previous Year Question Paper Pdf Download

WB HS Previous Years Question Paper 2015 | উচ্চমাধ্যমিক বিগত বছরের প্রশ্নপত্র 2015 [WBCHSE]

WB HS Previous Years Question Paper 2016 | উচ্চমাধ্যমিক বিগত বছরের প্রশ্নপত্র 2016 [WBCHSE]

WB HS Previous Years Question Paper 2017 | উচ্চমাধ্যমিক বিগত বছরের প্রশ্নপত্র 2017 [WBCHSE]

WB HS Previous Years Question Paper 2018 | উচ্চমাধ্যমিক বিগত বছরের প্রশ্নপত্র 2018 [WBCHSE]

WB HS Previous Years Question Paper 2019 | উচ্চমাধ্যমিক বিগত বছরের প্রশ্নপত্র 2019 [WBCHSE]

WB HS Previous Years Question Paper 2020 | উচ্চমাধ্যমিক বিগত বছরের প্রশ্নপত্র 2020 [WBCHSE]

WB HS Previous Years Question Paper 2021 | উচ্চমাধ্যমিক বিগত বছরের প্রশ্নপত্র 2021 [WBCHSE]

WB HS Previous Years Question Paper 2022 | উচ্চমাধ্যমিক বিগত বছরের প্রশ্নপত্র 2022 [WBCHSE]

WB HS Previous Years Question Paper 2023 | উচ্চমাধ্যমিক বিগত বছরের প্রশ্নপত্র 2023 [WBCHSE]

WB HS Previous Years Question Paper 2024 | উচ্চমাধ্যমিক বিগত বছরের প্রশ্নপত্র 2024 [WBCHSE]


সবার আগে সমস্ত পরীক্ষার গুরুত্বপূর্ণ নোটস এবং মকটেস্ট পেতে জয়েন করুন -

× close ad