ঔপনিবেশিক সমাজে জাতি সংক্রান্ত প্রশ্ন ও তার প্রভাব আলোচনা করো।

Published On:

WhatsApp Channel Join Now
Telegram Group Join Now

ঔপনিবেশিক সমাজে জাতি সংক্রান্ত প্রশ্ন তার প্রভাব আলোচনা করো

ভূমিকা:- ইউরোপের সাম্রাজ্যবাদী জাতিগুলি অন্য জাতিকে হীন বলে মনে করে তাদের উপর আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করা প্রভৃতির মাধ্যমে বারংবার প্রকাশ করত। যেমন

() জাতিগত শ্রেষ্ঠত্ব প্রচার : ইউরোপের সাম্রাজ্যবাদী জাতিগুলি তাদের অধিকৃত উপনিবেশে নিজেদের সীমাহীন জাতিগত গৌরবের কথা প্রচার করে। যেমন, জেমস মিল মনে করতেন ব্রিটিশ শাসনে অনুন্নত ভারতীয়দের মঙ্গল হচ্ছে।

() অভিভাবকত্বের মানসিকতা : সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রগুলির কিছু মানুষ এশিয়া ও আফ্রিকার উপনিবেশগুলির বাসিন্দাদের সঘোষিত অভিভাবক হিসেবে নিজেদের তুলে ধরেন। তাঁরা উপনিবেশের পিছিয়ে পড়া মানুষদের সংস্কৃতবান করে তোলার দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

() জাতির শ্রেষ্ঠত্ব : সাম্রাজ্যবাদী জাতিগুলি চার্লস ডারউইনের যোগ্যতম জাতির শ্রেষ্ঠত্ব রক্ষা’-র তত্ত্ব প্রচার করে। তারা বলে, পৃথিবীতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে জীবনধারণের উপকরণে ঘাটতি দেখা দিলে বিভিন্ন জাতির মধ্যে সংঘাত অনিবার্য।

() বিকৃত জাতীয়তাবাদ : ঊনবিংশ শতকের শেষ এবং বিংশ শতকের প্রথমার্ধে ইউরোপের বিভিন্ন সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রে বিকৃত বা উগ্রজাতীয়তাবাদের প্রসার ঘটে। এ ধরনের রাষ্ট্রের শাসকেরা নিজেদের দেশ ও জাতিকে শ্রেষ্ঠতম বলে মনে করে এশিয়া ও আফ্রিকার অনগ্রসর দেশগুলিকে পদানত করার উদ্যোগ নেয়।

আরো পড়ুন

দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাসের সমস্ত অধ্যায় থেকে  বড়ো প্রশ্ন উত্তর পেতে ক্লিক করুন

নঞার্থক প্রভাব:-

 অমানবিকতা : ইউরোপের ঔপনিবেশিক শাসক জাতির দ্বারা এশিয়া ও আফ্রিকার কৃয়াঙ্গ শাসিত জাতি দীর্ঘকাল ধরে ঘৃণা, বিদ্বেষ, অবহেলা ও অমানবিকতার শিকার হয়। শাসিত জাতিগুলি নিজেদের দেশেই দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে স্বীকৃত হয়।

দেশীয় ঐতিহ্যে আঘাত : নিজেদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে গর্বিত শ্বেতাঙ্গ জাতি এশিয়া ও আফ্রিকার উপনিবেশগুলিতে বিভিন্ন জাতির প্রাচীন ঐতিহ্যে জোের আঘাত হানে। ফলে প্রাচীন বহু সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য লুপ্ত হতে শুরু করে।

সদার্থক প্রভাব:-

জ্ঞানের প্রসার: ইউরোপীয় ঔপনিবেশিক জাতিগুলি জ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রে এশিয়া ও আফ্রিকার উপনিবেশগুলি বাসিন্দাদের তুলনায় যথেষ্ট আগ্রহী ছিল। ইউরোপের জ্ঞানভাণ্ডার এশিয়া ও আফ্রিকায় সঞ্চালিত হয়।

নবজাগরণের সূচনা: ইউরোপের সভ্য জাতিগুলি এশিয়া ও আফ্রিকার পিছিয়ে পড়া মানুষদের মধ্যে আধুনিক গণতান্ত্রিক আদর্শ প্রচারের ফলে নবজাগরণের সূচনা হয়।

মূল্যায়ন: এশিয়া ও আফ্রিকার পরাধীন উপনিবেশ গুলির কাছে সাম্রাজ্যবাদ ও উপনিবেশবাদ ছিল একটি অভিশাপ। এর কিছু ইতিবাচক দিক থাকলেও এর নেতিবাচক দিক ছিল সবথেকে বেশি। সেই কারণেই পরবর্তী সময়ে এর বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন শুরু হয় এবং শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে এশিয়া ও আফ্রিকার অধিকাংশ উপনিবেশ একে একে স্বাধীন হতে শুরু করে

আরো পড়ুন

দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাসের সমস্ত অধ্যায় থেকে  বড়ো প্রশ্ন উত্তর পেতে ক্লিক করুন


সবার আগে সমস্ত পরীক্ষার গুরুত্বপূর্ণ নোটস এবং মকটেস্ট পেতে জয়েন করুন -

আরও গুরুত্বপূর্ণ

× close ad