১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইনের প্রেক্ষাপট ও শর্তাবলি আলােচনা করাে। এই আইনের গুরুত্ব কী ছিল?

Published On:

WhatsApp Channel Join Now
Telegram Group Join Now

১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইনের প্রেক্ষাপট শর্তাবলি আলােচনা করাে এই আইনের গুরুত্ব কী ছিল?

সূচনা:- ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইনের প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন উপাদান সক্রিয় ছিল। যেমন一

মন্টফোর্ড আইনের ব্যর্থতা: ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের মন্টেগু চেমসফোর্ড আইন প্রণয়নের পরবর্তীকালে ভারতীয় রাজনীতিতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটে যায়। এই আইন ভারতীয়দের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ হলে গান্ধিজির নেতৃত্বে সারা ভারতে প্রবল গণ আন্দোলন শুরু হয়।

সাইমন কমিশনের রিপোর্ট: এই সময় ভারতীয়রা স্বায়ত্তশাসন লাভের উপযুক্ত কিনা তা যাচাইয়ের উদ্দেশ্যে সাইমন কমিশন ভারতে আসে। ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের মে মাসে কমিশনের রিপাের্টে নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ের ওপর সুপারিশ করা হয়।

 গােলটেবিল বৈঠক: সাইমন কমিশনের রিপাের্টের ভিত্তিতে ব্রিটিশ সরকার ভারতীয় নেতৃবর্গের সঙ্গে আলাপ-আলােচনার উদ্যোগ নেয়। প্রথম (১৯৩০ খ্রি.), দ্বিতীয় (১৯৩১ খ্রি.) ও তৃতীয় (১৯৩২ খ্রি.)—এই তিনটি গােলটেবিল বৈঠকের আলােচনার পরিপ্রেক্ষিতে ব্রিটিশ সরকার নতুন সাংবিধানিক সংস্কারের প্রয়ােজন অনুভব করে।

1935 খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইনের শর্তাবলি:-

 যুক্তরাষ্ট্র গঠন: এই আইনে ব্রিটিশ শাসনাধীন রাজ্য ও বিভিন্ন দেশীয় রাজ্যগুলিকে নিয়ে একটি সর্বভারতীয় যুক্তরাষ্ট্র গঠনের কথা বলা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের শাসনভার দেওয়া হয় বড়ােলাট ও তার অধীনস্থ একটি মন্ত্রীসভার হাতে।

আরো পড়ুন

দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাসের সমস্ত অধ্যায় থেকে  বড়ো প্রশ্ন উত্তর পেতে ক্লিক করুন

 কেন্দ্রীয় সরকার: ১৯৩৫-এর ভারত শাসন আইনে কেন্দ্রে পাঁচ বছর মেয়াদি দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা গঠনের কথা বলা হয়। কেন্দ্রীয় প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলিকে সংরক্ষিত (পররাষ্ট্র সম্পর্ক, প্রতিরক্ষা, সেনাবাহিনী, রেলপথ ইত্যাদি বিষয়) এবং হস্তান্তরিত (শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবহণের মতাে বিষয়গুলি) দপ্তরে রেখে কেন্দ্রে এক দ্বৈত শাসনব্যবস্থার (Dyarchy) প্রচলন ঘটানাে হয়।

প্রাদেশিক সরকার: ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইনের দ্বারা প্রদেশগুলিকে স্বায়ত্তশাসনের অধিকার প্রদান করা হয়। কেন্দ্রের অনুকরণেই প্রদেশগুলােরও শাসনকাঠামাে গঠন করা হয়। তবে প্রদেশগুলিতে আইনসভা এককক্ষ বা দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট উভয়ই হতে পারত।

[5] প্রাদেশিক বিভাজন: ১৯৩৫-এর ভারত শাসন আইন দ্বারা ভারতের প্রদেশগুলিকে দুইটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়। যথা一

গভর্নর শাসিত প্রদেশ: এর অন্তর্ভুক্ত ছিল বাংলা, বােম্বাই, মাদ্রাজ, যুক্তপ্রদেশসহ মােট ১১টি প্রদেশ।

চিফ কমিশনার শাসিত প্রদেশ: এর অন্তর্ভুক্ত ছিল মাড়ােয়ার, আজমীর, বেলুচিস্তান, কুর্গ এবং আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ এই পাঁচটি প্রদেশ।

১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইনের গুরুত্ব:-

যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনের ভিত্তি রচনা: ১৯৩৫-এর ভারতশাসন আইনের দ্বারা ভারতের শাসন ব্যবস্থাকে একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামাে প্রদান করা হয়। তাই এই আইনের ফলে ভারতে যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত হয়।

দায়িত্বশীল শাসনব্যবস্থার প্রবর্তন: এই আইনে কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক সরকারের মধ্যে ক্ষমতার বণ্টনের মধ্য দিয়ে এক দায়িত্বশীল শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা হয়।

স্বায়ত্তশাসনের অধিকার লাভ: ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইন ভারতীয়দের বহুদিনের স্বায়ত্তশাসনের অধিকারের বাসনা পূরণ করে। এই আইনের মাধ্যমে প্রদেশগুলি যেটুকু স্বায়ত্তশাসনের অধিকার পেয়েছিল, জিন্না ও মুসলিম লিগ তার প্রশংসা করে।

আরো পড়ুন

দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাসের সমস্ত অধ্যায় থেকে  বড়ো প্রশ্ন উত্তর পেতে ক্লিক করুন


সবার আগে সমস্ত পরীক্ষার গুরুত্বপূর্ণ নোটস এবং মকটেস্ট পেতে জয়েন করুন -

আরও গুরুত্বপূর্ণ

× close ad