ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনকালে ভারতে আদিবাসী আন্দোলনের বিবরণ দাও।

Published On:

WhatsApp Channel Join Now
Telegram Group Join Now

ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনকালে ভারতে আদিবাসী আন্দোলনের বিবরণ দাও

Ans:- ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনকালে ভারতে বিভিন্ন আদিবাসীয় ও দলিত  আন্দোলন দেখা যায় তা নীচে আলোচনা করা হল-

[1] চুয়াড় বিদ্রোহ (১৭৬৮খ্রি.): ১৭৬৮ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ মেদিনীপুর ও বাঁকুড়া জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে চুয়াড় নামক উপজাতি সম্প্রদায় ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করে। ঘাটশিলার জমিদার তথা ধলভূমের রাজা জগন্নাথ সিংহের নেতৃত্বে বিদ্রোহ শুরু হয় এবং শীঘ্রই কৃষক ও জমিদাররা বিদ্রোহে যােগ দেয়।

[2] কোল বিদ্রোহ (১৮৩২ খ্রি.): বর্তমান বিহারের ছােটনাগপুর অঞ্চলে কোল উপজাতির বাস ছিল। তারা অত্যাচারী মহাজন, জমিদার ও ইংরেজ কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ১৮৩২ খ্রিস্টাব্দে বিদ্রোহ শুরু করে। বুদ্ধু ভগত, জোয়া ভগত, বিন্দরাই মানকি, সুই মুন্ডা প্রমুখ নেতা কোল বিদ্রোহে নেতৃত্ব দেন। দুবছর বিদ্রোহ চলার পর আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত ব্রিটিশ বাহিনীর কাছে বিদ্রোহীরা পরাজিত হয়।

[3] সাঁওতাল বিদ্রোহ (১৮৫৫ খ্রি.): ছােটনাগপুর, মানভূম, পালামৌ, বীরভূম, বাঁকুড়া, মেদিনীপুর প্রভৃতি অঞ্চলে বসবাসকারী সাঁওতাল উপজাতি ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে জমিদার, মহাজন ও ব্রিটিশ কর্মচারীদের বিরুদ্ধে তীব্র বিদ্রোহ শুরু করে। সিধু, কানু, চাঁদ, ভৈরব, বীরসিং, কালাে প্রামাণিক, ডােমন মাঝি প্রমুখ সাঁওতাল নেতার নেতৃত্বে প্রায় ৫০ হাজার সাঁওতাল বিদ্রোহী ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে সাঁওতাল বিদ্রোহে শামিল হয়।

[4] মুন্ডা বিদ্রোহ (১৯০০ খ্রি.): ছােটনাগপুর ও তার সন্নিহিত অঞ্চলে প্রচুর মুন্ডা বসবাস করত। বিভিন্ন শােষণ ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে বীরসা। মুন্ডার নেতৃত্বে মুন্ডারা ১৮৯৯-১৯০০ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ তীব্র আন্দোলন গড়ে তােলে যা উলগুলান বা ভয়ঙ্কর বিশৃঙ্খলা নামে পরিচিত।

আরো পড়ুন

দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাসের সমস্ত অধ্যায় থেকে  বড়ো প্রশ্ন উত্তর পেতে ক্লিক করুন

ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনকালে ভারতে দলিত আন্দোলন ব্রিটিশ শাসনকালে ভারতের বিভিন্ন অস্পৃশ্য নিপীড়িত মানুষ দলিত বলে পরিচিতি লাভ করেএই আন্দোলন গুলি হল

[1] জ্যোতিবা ফুলের আন্দোলন: ১৮৭०-এর দশকে জ্যোতিবা ফুলের নেতৃত্বে মহারাষ্ট্রে এক দলিত আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। তিনি ‘সত্যশােধক সমাজ প্রতিষ্ঠা করে দলিতদের মর্যাদা আদায়ের লক্ষ্যে আন্দোলন শুরু করেন। তিনি বলেন যে, ব্রাত্মণরা হল বিদেশি আর্যজাতির বংশধর।

[2] শ্ৰীনারায়ণ গুরুর আন্দোলন: কেরালার এজাভা নামক দলিত সম্প্রদায়ের নেতা শ্রীনারায়ণ গুরু (১৮৫৬-১৯২৮ খ্রি.) দলিত শ্রেণির সামাজিক মর্যাদা আদায়ের লক্ষ্যে আন্দোলন গড়ে তােলেন। দলিত হিন্দুরা যাতে অবাধে মন্দিরে প্রবেশ করতে পারে সে উদ্দেশ্যে তিনি বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।

[3] রামস্বামী নাইকারএর আন্দোলন: জাস্টিস পার্টির প্রভাব হ্রাস পাওয়ার পরবর্তীকালে দক্ষিণ ভারতে ই. ভি. রামস্বামী নাইকার-এর নেতৃত্বে দলিত আন্দোলন নতুন পথে পরিচালিত হয়। তার নেতৃত্বে গড়ে ওঠা এই আন্দোলন আত্মসম্মান আন্দোলন নামে পরিচিত।

[4] বাংলার দলিত আন্দোলন: বিংশ শতকের শুরুতে উচ্চবর্গীয় হিন্দুদের আর্থিক শােষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে এবং নিজেদের সামাজিক মর্যাদা আদায়ের লক্ষ্যে নমঃশূদ্ররা সক্রিয় আন্দোলন গড়ে তােলে। বাংলায় নমঃশূদ্র নেতা যােগেন্দ্রনাথ মণ্ডল ও প্রমথ রঞ্জন ঠাকুর এবং রাজবংশী নেতা ঠাকুর পঞ্চানন দলিত আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।

আরো পড়ুন

দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাসের সমস্ত অধ্যায় থেকে  বড়ো প্রশ্ন উত্তর পেতে ক্লিক করুন


সবার আগে সমস্ত পরীক্ষার গুরুত্বপূর্ণ নোটস এবং মকটেস্ট পেতে জয়েন করুন -

আরও গুরুত্বপূর্ণ

× close ad