সুয়েজ সংকট বিশ্লেষণ করো? সুয়েজ সংকটে ভারতের ভূমিকা কি ছিল?

Published On:

WhatsApp Channel Join Now
Telegram Group Join Now

সুয়েজ সংকট বিশ্লেষণ করো? সুয়েজ সংকটে ভারতের ভূমিকা কি ছিল?

সংকটের প্রেক্ষাপট: মিশরের উত্তর-পূর্বে ইংরেজ ও ফরাসিদের উদ্যোগে খনন করা একটি খাল হল- সুয়েজ খাল। 1759 খ্রিস্টাব্দে এর খনন কাজ শুরু হয় এবং 1859 খ্রিস্টাব্দে এতে বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচল শুরু হয়। ইউনিভার্সাল সুয়েজ ক্যানাল কোম্পানি 99 বছর মেয়াদে পরিচালনার দায়িত্ব পায়। কিন্তু, মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই 1956 খ্রিস্টাব্দে মিশরের রাষ্ট্রপতি নাসের এক ঘোষণার মাধ্যমে সুয়েজ খাল কে জাতীয়করণ করেন। যাকে কেন্দ্র করেই সুয়েজ সংকটের সূচনা হয়।

সুয়েজ সংকটের কারণ

আন্তর্জাতিক করনের চেষ্টা: আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ব্রিটেন ও ফ্রান্স সুয়েজ খালের ওপর সবথেকে বেশি নির্ভরশীল। তাই তারা এই খালের আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রণের দাবি জানালে নাসের বাঁধা দেন।

 বাঁধ নির্মাণে বাধা: মিশরের রাষ্ট্রপতি নাসের মিশরের আর্থিক উন্নয়নের জন্য নীল নদের ওপর আসোয়ান বাঁধ নির্মাণ করতে চেয়ে ছিলেন। বিশ্বব্যাংক আর্থিক সাহায্য ঘোষণার কথা বলেও আমেরিকা ও ব্রিটেনের কারণে বিশ্ব ব্যাংক প্রস্তাব বাতিল করে। ফলে নাসের ক্ষুব্ধ হন।

আরো পড়ুন

দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাসের সমস্ত অধ্যায় থেকে  বড়ো প্রশ্ন উত্তর পেতে ক্লিক করুন

 নাসিরের পশ্চাত্য বিরোধী মনোভাব: নাসের সুয়েজে ইংল্যান্ডের সৈন্যের উপস্থিতি মেনে নিতে পারেনি। যার বিরোধিতা করে তিনি সোভিয়েত রাশিয়া, চিন প্রভৃতি রাষ্ট্রে সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। ফলে পাশ্চাত্য দেশ গুলি নাসেরের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়।

 খালের জাতীয়করণ: নাসের এবং পাশ্চাত্য দেশগুলির মধ্যে যখন মনোমালিন্য চরমে তখন নাসের সুয়েজ খাল ও সুয়েজ ক্যানাল জাতীয়করণ করেন 1956 খ্রি: 26 জুলাই। জাতীয়করণের ঘোষণাতে বলা হয় – ক) সুয়েজ ক্যানালের নিয়ন্ত্রণ মিশরের হাতেই থাকবে। খ) এই ক্যানালে আদায় করা কর আসোয়ান বাঁধ নির্মাণে খরচ করা হবে।

সুয়েজ সংকট: নাসেরের উক্ত পদক্ষেপে ব্রিটেন, ফ্রান্স, ইসরাইল-আমেরিকা প্রভৃতি রাষ্ট্রগুলি ক্ষুব্ধ হয়। ব্রিটেন, ফ্রান্স, ঈশ্রায়েল – ‘ মিশরকে ‘ আক্রমণের পরিকল্পনা করে। ফলে সুয়েজকে কেন্দ্র করে যে আন্তর্জাতিক সংকট সৃষ্টি হয় তাই সুয়েজ সংকট নামে পরিচিত।

আক্রমণ যুদ্ধবিরতি: 1956 খ্রিস্টাব্দে 29 অক্টোবর ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, ইজরায়েল – ‘মিশর’ আক্রমণ করে সিনাই উপত্যকা দখল করে নেয়। কিন্তু জাতিপুঞ্জো, আমেরিকা প্রভৃতির উদ্যোগে শেষ পর্যন্ত 22শে ডিসেম্বর যুদ্ধবিরতি ঘটে।

সংকটে ভারতের ভূমিকা

প্রাথমিক প্রচেষ্টা:  ভারত নিজ স্বার্থেই এর সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসে। ভারত মনে করতো এটি মিশরেরই অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ, তাই মিশরেরই প্রধান নিয়ন্ত্রণ থাকা উচিত।

যোগসূত্রের চেষ্টা:  1956 খ্রিস্টাব্দে এই সমস্যা সমাধানে লন্ডন সম্মেলনে মিশরের জনপ্রতিনিধি যোগ দেয়নি, এই অবস্থায় ভারতের বিদেশ মন্ত্রী কৃষ্ণ মেনন দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনার যোগসুত্র স্থাপনের চেষ্টা করেন।

আক্রমণের নিন্দা: মিশরের উপর ব্রিটেন ও ফ্রান্স এবং ইজরায়েলের আক্রমকে তীব্র নিন্দা করে। প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু জাকির নগ্ন আক্রমণ বলে ধিক্কার জানান। এছাড়া ভারত জাতিপুঞ্জের শান্তি রক্ষার উদ্দেশ্যে- সেনা পাঠায়, যুদ্ধবিরতির চেষ্টা চালায়। তাই সুয়েজ সংকট সমাধানে ভারতের ভূমিকা ছিল যথেষ্ট সদর্থক।

আরো পড়ুন

দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাসের সমস্ত অধ্যায় থেকে  বড়ো প্রশ্ন উত্তর পেতে ক্লিক করুন


সবার আগে সমস্ত পরীক্ষার গুরুত্বপূর্ণ নোটস এবং মকটেস্ট পেতে জয়েন করুন -

আরও গুরুত্বপূর্ণ

× close ad